বিজয়ী দলের এক পুলিশ সদস্যের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশে মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই।

বুধবার ২৮ (ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন রাজারবাগ পুলিশ লাইনস প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন।

এদিন শিল্ড প্যারেড, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সার্বিক কার্যক্রম মূল্যায়নে কৃতিত্ব অর্জনকারী ইউনিটকে পুরস্কার, আইজিজ ব্যাজ এবং প্যারেডে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, আপনাদের প্রযুক্তিনির্ভর, গণমুখী, সেবামুখী, জনবান্ধব তথা নারী ও শিশুবান্ধব বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।

তিনি বলেন, পুলিশের সেবা প্রদানের মূল কেন্দ্র থানাকে জনগণের আস্থা ও ভরসার স্থানে পরিণত করতে চাই। দেশের সম্মানিত নাগরিকগণ যাতে সহজে ও নির্ভয়ে থানায় আসতে পারেন, তাঁদের সমস্যার কথা বলতে পারেন এবং সেবা গ্রহণ করতে পারেন—সে বিষয়ে আমি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছি। যাঁরা একেবারে সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, নিরীহ, নির্যাতিত, গরিব, নারী—তাঁদের জন্য থানাকে আমি বিচার পাওয়ার স্থান হিসেবে দেখতে চাই। এ জন্য প্রধান ও প্রথম কাজ হবে ভালো ব্যবহার ও জনগণের কথা শোনা এবং অতি দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। এ ক্ষেত্রে যেকোনো ব্যত্যয় গ্রহণযোগ্য হবে না।

পুলিশপ্রধান বলেন, সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছে দিতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা দেশকে সত্যিকার অর্থেই ২০৪১ সালে একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।

অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ও প্যারেড উপকমিটির সভাপতি মো. কামরুল আহসান অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ সময় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবার ৪৮৮ জন পুলিশ সদস্যকে ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ-২০২৩ (আইজিজ ব্যাজ)’ প্রদান করা হয়। আইজিপি তাঁদের ব্যাজ পরিয়ে দেন।

এ ছাড়া গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ প্রথম, কুমিল্লা জেলা পুলিশ্য দ্বিতীয় এবং পাবনা জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে কক্সবাজার জেলা পুলিশ প্রথম, নরসিংদী জেলা পুলিশ দ্বিতীয় ও নোয়াখালী জেলা পুলিশ তৃতীয়। ‘গ’ গ্রুপে এপিবিএন প্রথম, রাজবাড়ী জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং মাগুরা জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঘ’ গ্রুপে র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার প্রথম, র‍্যাব-৫ রাজশাহী দ্বিতীয় ও র‍্যাব-৭ চট্টগ্রাম তৃতীয় হয়েছে। ‘ঙ’ গ্রুপে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) প্রথম, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট দ্বিতীয় এবং ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ তৃতীয় হয়েছে।

মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে কুমিল্লা জেলা পুলিশ প্রথম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ প্রথম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং কক্সবাজার জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘গ’ গ্রুপে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ প্রথম, জয়পুরহাট জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঘ’ গ্রুপে র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার প্রথম, র‍্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় এবং র‍্যাব-৭ চট্টগ্রাম তৃতীয় হয়েছে। ‘ঙ’ গ্রুপে ডিএমপি ডিবি প্রথম, ডিএমপির মিরপুর বিভাগ দ্বিতীয় এবং ডিএমপির ওয়ারী বিভাগ তৃতীয় হয়েছে। ‘চ’ গ্রুপে এপিবিএন প্রথম, রেলওয়ে পুলিশ দ্বিতীয় এবং হাইওয়ে পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সার্বিক কার্যক্রম মূল্যায়নে ‘ক’ গ্রুপে কুমিল্লা জেলা পুলিশ প্রথম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ দ্বিতীয় ও সিলেট জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে নোয়াখালী জেলা পুলিশ প্রথম, লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং জামালপুর জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘গ’ গ্রুপে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ প্রথম, শেরপুর জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঘ’ গ্রুপে ডিএমপির লালবাগ বিভাগ প্রথম, ডিএমপির মতিঝিল বিভাগ দ্বিতীয় ও ডিএমপির ওয়ারী বিভাগ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঙ’ গ্রুপে র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার প্রথম, র‍্যাব-৫ রাজশাহী দ্বিতীয় এবং র‍্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ তৃতীয় হয়েছে।

শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন। দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ। 

বার্ষিক পুলিশ প্যারেড কুচকাওয়াজে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন, দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ।

‘স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ; শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪। পুলিশ সপ্তাহ আগামী ৩ মার্চ শেষ হবে।