প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানীকারক সমিতি (বিজিএমইএ) আয়োজিত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক-২০২২’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। ছবি: বাসস

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনিয়োগ ও সোর্সিংয়ের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিতে বিদেশি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার সকালে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানীকারক সমিতি (বিজিএমইএ) আয়োজিত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক-২০২২’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এই আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। এর ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে এখন বিনিয়োগ এবং সোর্সিং-এর জন্য সর্বাধিক অনুকূল গন্তব্য হয়ে উঠেছে। দেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতি, একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটা-মুক্ত সুবিধা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে।’ খবর বাসসের।

শেখ হাসিনা বলেন, ‌’বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে আমি দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকেও অনুরোধ করছি। আপনারা তাদের প্রযুক্তি, জ্ঞান আপনাদের শিল্প খাতে গ্রহণ করুন।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণই আমাদের সাহসের উৎস। জনগণের আর্থসামাজিক উন্নতি হচ্ছে এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার এখন মাথাপিছু আয়। ক্রয় ক্ষমতাও এ দেশের মানুষের বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরী হচ্ছে।’ তিনি বলেন, শুধু রপ্তানি করলেই চলবে না, নিজের দেশের ভেতরেও বাজার সৃষ্টি করতে হবে এবং করোনাকালীন তাঁর সরকার যতটা সম্ভব তৃণমূলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া ও সরবরাহ করা যায় সেটা করেছে। এর ফলে মানুষের ভেতর হাহাকার আসেনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পদধ্বনি শুনছি আমরা। যারা শ্রম দেয় তারা আমার বাংলাদেশেরই মানুষ তাদেরকে আমরা আরো উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলতে চাই । কারণ এখন বিজ্ঞানের কারণে প্রযুক্তির নতুন নতুন আবির্ভাবে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত করে দক্ষ মানব সম্পদ আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং উদ্যোক্তাও সৃষ্টি করছে।’ তিনি বলেন, ‌’এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে যে প্রভাব ফেলবে সেজন্য আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করা হয়েছে। আমাদের তৈরি পোশাক শিল্পে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট প্রযুক্তির ব্যবহারের ব্যবস্থা নিতে হবে, সেজন্য আমরা প্রস্তুত, আমরা তৈরি করছি।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌’মানুষের মাথায় আমাদের এই চিন্তাও ঢোকাতে হবে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মেলাতে হলে আমাদের দেশে-বিদেশে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন পড়বে। তারা যাতে প্রযুক্তি জ্ঞানেও দক্ষ হয় সেজন্য আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ তিনি তৈরী পোশাক রপ্তানীকারকদের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কাপড়ের গুণগত মান বৃদ্ধি এবং শ্রম বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার আহবান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুটি কফি টেবিল বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন, যার ওপর বিজিএমইএ চলতি বছরের শুরু থেকে কাজ করছে। পোশাক রপ্তানিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৪ জন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারককে বিশেষ সম্মাননাও প্রদান করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ইন্টারন্যাশনাল এ্যাপারেল ফেডারেশন (আইএএইফ) সভাপতি সেম অলটান এবং বিজিএমইএ সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি বক্তব্য দেন করেন। বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাগত বক্তব্য দেন। দেশের পোশাক খাতের অগ্রগতি এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক পৃথক দুটি ভিডিও চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।