করোনাভাইরাসের অমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত দুই রোগীর সন্ধান মিলেছে বাংলাদেশে। তাঁরা দুজনই বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটার। তাঁরা আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে সফর করে সম্প্রতি দেশে ফিরে আইসোলেশনে রয়েছেন।

শনিবার ঢাকার শিশু হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলাদেশে প্রথম অমিক্রনের রোগী ধরা পড়ার কথা জানান।

একই দিনে আরেক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, ওই দুই খেলোয়াড়ের কারও কোনো ধরনের শারীরিক জটিলতা নেই, তাঁরা ‘ভালো’ আছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

নতুন করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণের পর অসংখ্যবার রূপবদল করলেও এক বছরের বেশি সময় পর ডেল্টা ভেরিয়েন্টই মহামারির মাত্রা ভয়াবহ করে তোলে। এরপর টিকা যখন মহামারি নিয়ন্ত্রণের আশা দেখাচ্ছে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় ধরা পড়ে ভাইরাসটির নতুন রূপ অমিক্রন।

এরপর আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করে।

এর মধ্যেই জিম্বাবুয়েতে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ দল ঢাকায় পৌঁছানোর পর সব খেলোয়াড়কে পাঠানো হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। সেখানে নমুনা পরীক্ষার পর দুজনের করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে।

তার ছয় দিন পর শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে ওই দুই খেলোয়াড় অমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত।
তিনি বলেন, “আমাদের দুজন যে নারী ক্রিকেটার, যাঁদের শরীরে অমিক্রন ভাইরাস পাওয়া গেছে, তাঁদের আমরা কোয়ারেন্টিনে রেখেছি এবং তাঁরা সুস্থ আছেন।

“তাঁদের যা যা চিকিৎসা দরকার, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঝে মাঝেই তাঁদের পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। দুই সপ্তাহ আমরা দেখব, সম্পূর্ণ সেরে উঠলে তখন তাঁদের আমরা ছাড়তে পারব।”

দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে অমিক্রনের প্রথম রোগী ধরা পড়েছিল, সেখানকার এক চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যে এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্তদের উপসর্গ মৃদু। আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনও পড়ছে না।

ভারতে যে ৩৩ জনের মধ্যে অমিক্রন ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের তেমন কোনো জটিলতা নেই বলে দেশটির স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অমিক্রনের রোগীদের ক্ষেত্রে দুর্বল ভাব এবং গা ও মাথা ব্যথার উপসর্গই দেখা যাচ্ছে। তাঁদের অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি, যেটা ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল।

অমিক্রনে বিশ্বে এখনো কারও মৃত্যুর নিশ্চিত খবরও পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুই নারী ক্রিকেটারের সঙ্গে যাঁরা যারা ছিলেন, তাকদের সবার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এদিকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল সাংবাদিকদের বলেন, অমিক্রন আক্রান্ত দুই ক্রিকেটারের খোঁজই নিয়মিত রাখছেন তিনি।

তাঁরা সুস্থ আছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁদের কোনো উপসর্গ নেই।

তাঁদের সঙ্গী অন্য নারী ক্রিকেটাররাও কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন বলে জানান তিনি।