বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট নৌ পুলিশের নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয়েছে। সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে জাঁকজমকপূর্ণ র্যালির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির সূচনা হয়।
র্যালিতে নেতৃত্ব দেন নৌ পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম। এ উপলক্ষে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা হয়।
নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মাননীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং নৌপরিবহনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রতিষ্ঠার নবম বছরেই নৌ পুলিশ একটি শক্তিশালী অবস্থানে এসেছে। নৌ পুলিশ আছে বলেই আমরা আজ অনেক সফলতার গল্প শুনছি। দেশ মৎস্যসম্পদে ভরপুর হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, নদীপথে ডাকাতি, অপহরণ, জেলেদের ধরে নিয়ে আটকে রাখার ঘটনা ঘটত। নৌ পুলিশের আভিযানিক কার্যক্রমের ফলে এসব অপরাধ বন্ধ হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মৎস্য আহরণ ও মৎস্য খাতে অর্থনৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে নৌ পুলিশকে আরও শক্তিশালী করতে আমরা কাজ করছি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, নৌ পুলিশ অনেক ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে একসময় কাজ করেছে। এখন সে দৃশ্য বদলেছে। মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও মৎস্য আহরণ বৃদ্ধিতে নৌ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, করোনাকালে তিন দেশ মৎস্য আহরণে বড় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়নি। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। নৌপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গঠন করা হয়েছে বিশেষায়িত ইউনিট নৌ পুলিশ।
তিনি বলেন, শুধু হালদা নয়, নৌ বাণিজ্য ও অভ্যন্তরীণ নৌপথকে নিরাপদ করেছে নৌ পুলিশ ৷ নদী রক্ষায় সব সময় নৌ পুলিশকে ডাকলে পাওয়া গেছে।
সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌপথের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় নৌ পুলিশ গত ৯ বছর অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। নৌ পুলিশকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নির্দেশনায় ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর নৌ পুলিশ গঠিত হয়। নৌ পুলিশ আভিযানিক সফলতা দিয়ে নৌপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ফলে নৌপথ নিরাপদ হয়েছে, মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে। নৌ পুলিশ নৌ অঞ্চলের মানুষের সমর্থন ও আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নৌ পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ইলিশ ও নদীর সব ধরনের মাছ সংরক্ষণে নৌ পুলিশ কাজ করে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ইলিশ উৎপাদন বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদনও বেড়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাছের রপ্তানি আগের তুলনায় বেড়েছে। এই সেক্টরে আরও বেশি কাজ করতে পারলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নৌ পুলিশের কার্যক্রমের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন স্মরণীয় করে রাখতে অতিথিবৃন্দ একটি কেক কাটেন।