নৌ পুলিশের অভিযানে জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল ও মাছ। ছবি: পুলিশ নিউজ

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের পাঁচ দিনের বেশি সময়ে ২ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩০ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ও ১ হাজার ২৮২ কেজি ইলিশ জব্দ করেছে নৌ পুলিশ।

অভিযান শুরুর দিন ৭ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর দুপুর ১২টা পর্যন্ত এগুলো জব্দ করা হয়।

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে দেশের নদ-নদী থেকে যেকোনো ধরনের মৎস্য আহরণ, মজুত, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ২২ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে বরিশাল নৌ অঞ্চলে ১৫টি স্থায়ী ও ৫টি অস্থায়ী থানা ও ফাঁড়িতে প্রায় ৫০০ অফিসার ও ফোর্স নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪২টি টিম দিবারাত্রি অভিযান পরিচালনা করছে। ১২ অক্টোবর দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জালের পাশাপাশি ৫৩টি বেহুন্দী জাল উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এসব জালের আনুমানিক মূল্য ৯৩ কোটি ১১ লাখ ৩১ হাজার ৪০০ টাকা।

অভিযানে জব্দকৃত ১ হাজার ২৮২ কেজি ইলিশের আনুমানিক মূল্য ৪ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা। পাশাপাশি ৮৮টি নৌকাও জব্দ করা হয়।

উদ্ধারকৃত জালগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। জব্দকৃত মাছ এতিম ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

২২১ জেলে গ্রেপ্তার

গত ৫ দিনের অভিযানে ২২১ জেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময়ে মৎস্য আইনে ১৬টি মামলা এবং সরকারি কাজে বাধাদানে ভোলা জেলায় একটি মামলা করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০২ জেলের প্রত্যেককে ১ বছর করে এবং একজনকে ২০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার জন্য ২৫ জেলেকে ৮৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

আটক ৬০ জন শিশু হওয়ায় তাদের অভিভাবকের জিম্মায় মুচলেকায় মুক্তি দেওয়া হয়।

বিশেষ অভিযান

নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে আসা পুলিশ সুপার (অপারেশন্স অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) ড. আ.ক.ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়ার নেতৃত্বে ৮ ও ৯ অক্টোবর ভোলার পূর্ব ইলিশা নৌ থানা ও মির্জাকালু নৌ পুলিশ ফাঁড়ির আওতাধীন এলাকার নদীগুলোতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। একই কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১০ অক্টোবর হিজলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার আওতাধীন নদী এবং ১১ অক্টোবর পটুয়াখালীর কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির আওতাধীন নদীগুলোতে এ ধরনের অভিযান চালানো হয়।

নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে আসা অতিরিক্ত ডিআইজি (দক্ষিণ) কাইয়ুমুজ্জামান খান বিপিএম, পিপিএম ও পুলিশ সুপার (অপারেশন্স অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) ড. আ.ক.ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়ার নেতৃত্বে বরিশালের কালিগঞ্জ ও হিজলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির আওতাধীন নদীগুলোতে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানকালে নদীতে মাছ ধরার অপরাধে ২৯ জেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ৫ জেলেকে এক বছর করে কারাদণ্ড এবং ১১ জনের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাকি ১৩ জন শিশু হওয়ায় অভিভাবকদের কাছে মুচলেকায় জিম্মায় দেওয়া হয়।

নৌ পুলিশ জানায়, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত আছে।