প্রশাসনের ২৮ জন কর্মকর্তা এবং দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের জন্য মনোনীত করেছে সরকার।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই পদকের জন্য মনোনীতদের ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উপলক্ষে আগামী ৩১ জুলাই রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই পদক বিতরণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীতদের হাতে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ তুলে দেবেন বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ২০১৬ সাল থেকে জনপ্রশাসন পদক দেওয়া শুরু করে সরকার। গত বছর থেকে এই পদকের নাম বদলে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক করা হয়।

এবার ‘নীতি ও প্রশাসনিক পদ্ধতির সংস্কার’ শ্রেণিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং ‘গবেষণা ও মানবকল্যাণে এর ব্যবহার’ শ্রেণিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পদক পাচ্ছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।

‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’ শ্রেণিতে দলগতভাবে এই পদক পাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব) মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন আহম্মদ কবীর, লক্ষ্মীপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও বর্তমানে বিসিএস প্রশাসন একাডেমির উপপরিচালক নূর-এ-আলম, সদর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন (বর্তমানে বিএসটিআইয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) এবং রায়পুর উপজেলার ইউএনও অনজন দাশ।

খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব) প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, খাগড়াছড়ির সাবেক এডিসি (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব) কে এম ইয়াসির আরাফাত, খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (বর্তমানে মাগুরার মহম্মদপুরের সহকারী কমিশনার-ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো ও খাগড়াছড়ির সাবেক সহকারী কমিশনার (মাগুরা জেলার সহকারী কমিশনার) শেখ নওশাদ হাসান ‘উন্নয়ন প্রশাসন’ শ্রেণিতে এই পদক পাবেন।

‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ শ্রেণিতে শরীয়তপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার) মো. পারভেজ হাসান, শরীয়তপুরের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সাবেক উপপরিচালক (বর্তমানে অধিদপ্তরের উপপরিচালক) মো. মতলুবর রহমান, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ইউএনও কামরুল হাসান সোহেল এবং জাজিরা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেনকে এই পদক দেওয়া হবে।

‘পরিবেশ উন্নয়ন’ শ্রেণিতে হবিগঞ্জের সাবেক ডিসি (বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব) ইশরাত জাহান, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশলী) মো. শাহানেওয়াজ তালুকদার, হবিগঞ্জের সহকারী কমিশনার নাভিদ সারওয়ার ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী দিলীপ কুমার দত্ত এবার এ পদক পাচ্ছেন।

গাইবান্ধার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) উপপরিচালক মো. আবদুস সবুর, গাইবান্ধা সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. তাহাজুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল কামাল আজাদ, গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক ও পলাশবাড়ীর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানকে ‘মানবসম্পদ উন্নয়ন’ শ্রেণিতে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

‘দুর্যোগ ও সংকট মোকাবেলা’ শ্রেণিতে ব্যক্তিগতভাবে পদক পাচ্ছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান।

‘সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শ্রেণিতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদি উর রহিম জাদিদকে এই পদক দেওয়া হবে।

‘অপরাধ প্রতিরোধ’ শ্রেণিতে র‌্যাব-১১ এর জঙ্গি সেলের সাবেক ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও কমান্ডার (বর্তমানে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার) মির্জা সালাহ উদ্দিন, ‘জনসেবায় উদ্ভাবন’ শ্রেণিতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা এবং ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ শ্রেণিতে নওগাঁর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নাজমুল হক বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, মনোনীতদের পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সংবলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।

ব্যক্তিগত অবদানের জন্য দুই লাখ টাকা, দলগত অবদানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হবে। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট ছাড়াও নগদ পুরস্কারের পাঁচ লাখ টাকা সদস্যদের মধ্যে সমান হারে বণ্টন করা হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননা পদক দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা এবং ইতোপূর্বে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা নামের শেষে ‘বঙ্গবন্ধু পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রিশন অ্যাওয়ার্ড’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ ‘বিপিএএ’ টাইটেল ব্যবহার করতে পারবেন।

পদকপ্রাপ্তরা আনুষ্ঠানিক সরকারি কর্মসূচিতে পোশাকের সঙ্গে সরকার অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের মনোগ্রাম ব্যবহার করতে পারবেন।