পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার ৩ আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানাপুলিশ ১৫ বছরের কিশোর আব্দুল মালেক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও এর সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

জানা গেছে, ২৮ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে দুপচাঁচিয়া থানাধীন চেঙ্গা এলাকার মো. লবির উদ্দিনের পানির পাম্পের পাশে একটি ধান ক্ষেত থেকে আব্দুল মালেকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত মালেক চেঙ্গা ছাতিয়াগাড়ী গ্রামের মৃত হাসমত আলী হাসু ও তারা বানুর ছেলে। সে দুপচাঁচিয়া সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি মুরগির দোকানের কর্মচারী ছিল।

তারা বানু পুলিশকে জানান, আব্দুল মালেক গত চার/পাঁচ বছর ধরে দুপচাঁচিয়া সিও অফিস কাঁচা বাজারে জনৈক মো. জহুরুল ইসলামের মুরগির দোকানে কাজ করে আসছিল। তাদের গ্রামের মো. মোসলেম (৩০) নামের আরেকজনও একই দোকানে কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে আব্দুল মালেক ও মোসলেম প্রতিদিনের মতো কাজে যায়। কিন্তু রাতে মালেক আর বাড়ি ফেরেনি। ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় তারাবানু মোসলেমের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেন। তখন মোসলেম জানান, আব্দুল মালেক তার ছোট ভাই মোক্তার হোসেনের (২০) সাথে দুপচাঁচিয়া সিও বাজারে আছে, তারা একসঙ্গে বাড়িতে আসবে। কিন্তু ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় তারা বানু তার ছেলেকে খোঁজাখুজি করতে থাকেন।

২৮ এপ্রিল সকালে চেঙ্গা গ্রামের জনৈক মো. আব্দুল খালেক(৫৫) তারা বানুকে জানান যে, তার ছেলে মালেকের মৃতদেহ কাঁদা মাখা অবস্থায় একটি ধান ক্ষেতের মধ্যে পড়ে আছে।

এরপর খবর দেওয়া হলে দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে জোর তদন্ত শুরু করে।

২৮ এপ্রিল দুপচাঁচিয়া থানার একটি চৌকস টিম পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সার্বিক দিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে দুপচাঁচিয়া থানা এলাকায় পৃথক ২টি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- আদমদীঘি থানাধীন মুড়ইল তালুকদারপাড়া গ্রামের মো. আ. রাজ্জাকের ছেলে মো. মাহবুব আলম (৩০), দুপচাঁচিয়া থানাধীন চেঙ্গা গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. মোক্তার (২১) এবং চেঙ্গা ছাতিয়াগাড়ী গ্রামের মৃত হাসমত আলী হাসুর ছেলে মো. তারেক।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামি মাহবুব, মোক্তার ও তারেক চেঙ্গা ছাতিয়াগাড়ী ও আশপাশের এলাকায় মাদক সেবন করে মোবাইল চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের চুরি, ছিনতাই করে আসছিল। আব্দুল মালেক জানতে পেরে তার ভাই তারেককে নিষেধ করে কিন্তু তারেক তার কথা শোনে না। সে মাহবুব ও মোক্তারের প্ররোচনায় নেশাসহ চুরি করা অব্যাহত রাখলে আব্দুল মালেক তা পুলিশকে জানিয়ে দিবে বলে জানালে তারেক তার ভাই আব্দুল মালেককে চড় থাপ্পর মারে। এ ঘটনার জেরে ৩/৪ দিন আগে আব্দুল মালেক তারেককে মারধর করে। এরপর তারেক অপর আসামি মাহবুব ও মোক্তারকে ঘটনা জানালে তারা পরিকল্পিতভাবে আব্দুল মালেককে ধান ক্ষেতের মধ্যে সুকৌশলে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং আব্দুল মালেকের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন ও তার কাছে থাকা কিছু টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।

দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুর রশিদ সরকার জানান যে, আসামিদেরকে শিগগিরই আদালতে উপস্থাপন করা হবে।