ফেনীর একটি ডাল মিল থেকে গত জুন মাসে ৪০০ বস্তা চনা বুট ভৈরবে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ট্রাকের মালিক-চালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার সকালে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ট্রাকমালিক সিরাজগঞ্জের উল্লাহ পাড়া থানার রুদ্রঘাতি পশ্চিম পাড়ার সাইফুল ইসলাম (৪৩), বগুড়ার কাহালু থানার বিষাবর্গ এলাকার ট্রাকচালক আবদুস সালাম (৪৫), মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার চর কাঠারী এলাকার হুমায়ুন কবির (৩৩)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, ফেনীর মহিপাল এলাকার মেসার্স আল আমিন ভাজি বুট ও ডাল মিলস থেকে গত ২১ জুন ৪০০ বস্তা চনা বুট নিয়ে একটি ভুয়া নম্বরধারী ট্রাক ‘মেসার্স মামনি ট্রান্সপোর্ট’ ভৈরবের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু ট্রাকটি ভৈরবে না পৌঁছালে ছয় দিন পর প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আজিম ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
এসপি বলেন, থানা থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। পরে ডিবির এসআই জসিম উদ্দিন মামলাটির তদন্ত শুরু করেন। তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে, সিরাজগঞ্জের সদর থানা-পুলিশ একটি সন্দেহজনক ট্রাক আটক করেছে। এরপর এসআই জসিম সিরাজগঞ্জ থানায় গিয়ে ট্রাকমালিক সাইফুল ইসলামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় ট্রাকমালিক ফেনী থেকে ৪০০ বস্তা চনা বুট আত্মসাতের ঘটনা স্বীকার করে এর সঙ্গে জড়িত অন্যদের নাম জানান।
জাকির হাসান জানান, এরপর ডিবি অভিযান চালিয়ে ২১ জুলাই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কনচি পাড়া থেকে ওই ট্রাকচালক আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করে। পরে চালকের দেওয়া তথ্য মতে, ২২ জুলাই ঢাকার ধামরাই থানার ডাউটিয়া চেয়ারম্যান মার্কেট থেকে ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে তাঁর গোডাউন থেকে আত্মসাৎ করা ৪০০ বস্তার মধ্যে ২৩০ বস্তা চনা বুট জব্দ করা হয়েছে।
এসপি আরও বলেন, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ুন কবির জানান, ১৭০ বস্তা চনা বুট তিনি অন্য জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকমালিক জানান, ট্রাকের ভুয়া কাগজপত্র তৈরির কাজে পাবনার সাঁথিয়া থানার মোক্তার হোসেন তাঁদেরকে সহায়তা করে থাকেন।
পুরো অভিযানে একটি ট্রাক, ২৩০ বস্তা ছোলার ডাল, পাঁচটি জাল নম্বরপ্লেট ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জাল কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ আত্মসাতের সঙ্গে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার সালাম জড়িত থাকলেও তিনি পলাতক রয়েছেন।
ডিবির ওসি সদীপ কুমার দাস বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে রোববার দুপুরে ফেনীর আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে।