প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আইটি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সাড়ে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মূলহোতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ (২২) তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে নোয়াখালী জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে সকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় পৃথক অভিযানের মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। খবর ঢাকা পোস্টের।

এসময় তাদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আইটি অফিসার পরিচয়ে আসামি আবদুল্লাহ আল মাসুদের তৈরি করা ভুয়া আইডি কার্ড, ভুয়া ভিজিটিং কার্ড, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত তিনটি মুঠোফোন ও বিভিন্ন ব্যাংকের তিনটি এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়।

আসামিরা হলেন- ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের হক সাহেবের বাড়ির মো. ওবায়দুল হকের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (২২), একই গ্রামের কুরি বাড়ির বাবুল চন্দ্র কুরির ছেলে জীবন চন্দ্র কুরি (২৯) ও ফরিদপুরের বনমালীদিয়া গ্রামের সিকদার বাড়ির মৃত ইব্রাহিম সিকদারের স্ত্রী সুইটি আক্তার (২৬)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতারক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আইটি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোলাম রসুলের (৬২) সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর আসামি জীবন চন্দ্র কুরিকে নিজের সহযোগী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। গোলাম রসুলের মুঠোফোনে থাকা ইমেইল হ্যাক করার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর আসামি সুইটি আক্তার নিজেকে কখনো ব্যাংকের স্টাফ, কখনো মন্ত্রণালয়ের স্টাফ বলে পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনে থাকা সব অ্যাপসের অ্যাকসেস নিয়ে নেন।

এরপর কৌশলে বিভিন্ন সময়ে বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় ও এবি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিক ট্রানজেকশনের মাধ্যমে মোট সাতাশ লাখ আটচল্লিশ হাজার আটশত সাতানব্বই টাকা হাতিয়ে নেন। ভুক্তভোগী গোলাম রাসুল যখন বিষয়টি টের পান তখন তার সব টাকা প্রতারক চক্র তুলে নিয়েছে।

পরে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বেগমগঞ্জ মডেল থানায় তিনি একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় পৃথক অভিযানের মাধ্যমে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আসামি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আইটি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে টাকাগুলো হাতিয়ে নেন। টাকাগুলো তার নিজের ও মৃত স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।