জয়পুরহাটে গ্ৰেপ্তার হওয়া ভুয়া পুলিশ। ছবি: জয়পুরহাট জেলা পুলিশ

তিন বন্ধু জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে বাসে করে জেলা শহরে আসার পথে বাসে থাকা এক ব্যক্তি পুলিশের এসআই (উপপরিদর্শক) পরিচয় দিয়ে তাঁদের হুমকি দেন। বাস থেকে নেমে অর্থ দাবি করেন। কৌশলে ওই তিন বন্ধু বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ভুয়া এসআইকে আটক করে।

শনিবার জয়পুরহাট থানায় মামলা করার পর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আর ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার বিকেলে।

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম উত্তম কুমার ঘোষ (৪০)। তিনি জয়পুরহাট শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকার মৃত ধীরেন্দ্রনাথ কুমার ঘোষের ছেলে। খবর ঢাকা পোস্টের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর রানীনগর উপজেলার তৌকির আহামেদ (৩১) তাঁর দুই বন্ধুসহ ব্যক্তিগত কাজে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা সদরে গিয়েছিলেন। শুক্রবার বিকেলে তাঁরা বাসযোগে জয়পুরহাটে ফিরছিলেন। ওই বাসে উত্তম কুমার ঘোষসহ আরও তিন ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা নিজেদের পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে বাসের ভেতর তৌকির আহামেদসহ তাঁর দুই বন্ধুর কাছে মাদক আছে বলে গ্রেপ্তারের ভয় দেখান।

বিকেল চারটায় বাসটি জয়পুরহাট শহরের পাঁচুর মোড়ে পৌঁছায়। সেখান থেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দেওয়া উত্তম কুমার ঘোষসহ তিন ব্যক্তি ওই তিনজন বাসযাত্রীকে জিম্মি করে শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের পাশে খাদ্যগুদাম সড়কে নিয়ে আসেন। এরপর পুলিশের এসআই পরিচয় দেওয়া উত্তম কুমারসহ তিন ব্যক্তি মাদকের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ওই তিনজনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং ১ হাজার ৮০০ টাকা কেড়ে নেন।

এ সময় তৌকিরের এক বন্ধু শরিফুল ইসলাম প্রস্রাব করার কথা বলে সেখান থেকে একটু দূরে গিয়ে তাঁর মুঠোফোন থেকে জাতীয় সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের এসআই পরিচয় দেওয়া উত্তম কুমার ঘোষসহ তিনজন দৌড় দেন। এ সময় পুলিশ উত্তম কুমারকে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় তৌকির আহামেদ বাদী হয়ে উত্তম কুমারসহ পুলিশের এসআই পরিচয় দেওয়া তিনজনের বিরুদ্ধে শনিবার থানায় একটি মামলা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জয়পুরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে.এম আলমগীর জাহান বলেন, উত্তম কুমার ঘোষসহ আরও কয়েকজন পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে ছিনতাই-চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। পুলিশের এসআই পরিচয়ে উত্তম কুমার ঘোষসহ তিন ব্যক্তি শুক্রবার বিকেলে তিনজনকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দিয়ে টাকা আদায় করছিলেন। এ সময় পুলিশ সেখানে গিয়ে উত্তম কুমার ঘোষকে আটক করে। উত্তমের দুই সহযোগী পালিয়ে যান। তাঁদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। উত্তম কুমারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।