সিটিটিসির অভিযানে গ্রেপ্তার প্রতারকচক্রের সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও গ্রুপে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ শিশুদের ছবি পোস্ট করে চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইত চক্রটি। সঙ্গে জুড়ে দিত বিকাশ অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর। কোনো কিছু যাচাই না করে অনেকে টাকা পাঠাতেন। এভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। সম্প্রতি পুনাক সভানেত্রীর নজরে আসার পর ঘটনার নাটকীয় মোড় নেয়। ধরা পড়ে ওই চক্রের চার সদস্য। খবর আজকের পত্রিকার।

অসুস্থ শিশুর ছবি ফেসবুকে দিয়ে আর্থিক সহায়তা চাওয়া একটি পোস্ট সম্প্রতি পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার নজরে আসে। তিনি পুনাকের পক্ষ থেকে শিশুটির বাবাকে আর্থিক সহায়তা দিতে চিকিৎসাপত্রসহ ডেকে পাঠান। কিন্তু শিশুটির বাবা পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিটি আসছিলেন না। এরই মধ্যে একই ছবি ব্যবহার করে অন্য আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। এতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে অনুরোধ করেন পুনাক সভানেত্রী।

এরপর সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে প্রতারক চক্রের হদিস। অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের চার সদস্যকে। তাঁরা হলেন— রেজাউল ইসলাম, হাফিজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ওরফে আকাশ ও তানভীর আহাম্মেদ। তাঁদের কাছ থেকে ১০টি মুঠোফোন, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টসহ ১৫টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ২ লাখ টাকাও জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন নামে ২৭টি ভুয়া ফেসবুক আইডি পরিচালনা করতেন তাঁরা।

প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইন্টারনেট রেফারেল টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ জানান, প্রতারক চক্রটি দেশি-বিদেশি অসুস্থ ব্যক্তিদের ছবি সংগ্রহ করে। এরপর বিভিন্ন গ্রুপে ভুয়া আইডি দিয়ে চিকিৎসার নামে সাহায্যের আবেদন করে পোস্ট করে আসছিল। এভাবে তারা প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।

ধ্রুব জ্যোতির্ময় আরও জানান, এই চক্রের কর্মকাণ্ড জানার পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর থেকে রেজাউল, হাফিজুল ও আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাজধানীর মিরপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের আরেক সদস্য তানভীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের ডিএমপির রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।