পাবনার দাপুনিয়া এলাকার আলোচিত আজাদ (২২) হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল ও রক্তমাখা একটি জ্যাকেট ।

গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৭টার সময় বাদী আ. হাকিমের ছেলে আজাদ (২২) নিজ বাড়ী থেকে একটি কালো রংয়ের ডিসকভার মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়ানোর কথা বলে বের হয়ে গেলেও আর ফেরত আসেননি। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুজি করে ১২ মার্চ বিকাল পাবনা থানায় এসে বাদী নিখোঁজের জিডি করেন।

খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ১৩ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ভিকটিম আজাদের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া এলাকায় মোশাররফ চেয়ারম্যানের খামারের পাশে লিচু বাগানে পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীর সার্বিক দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মাসুদ আলমের নেতৃত্বে পাবনা পাবনা থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি যৌথ টিম তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি
মো. আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাটকে (২৮),
গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আজাদ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। সম্রাট জানান, তারা পরষ্পর ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সাথে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। প্রায় ১ মাস আগে আসামি ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে গেলে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন মোটরসাইকেল মেরামত বাবদ ভিকটিমের ২০০০ টাকা খরচ হয়। সেই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে আসামি ও ভিকটিমের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। সেই থেকে আসামি ভিকটিমকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসামি কৌশলে ভিকটিমকে ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান এবং কথাবার্তার একপর্যায়ে আসামির কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে ভিকটিমের গলায় ও চোখের নিচে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর লাশ টেনে হিচড়ে ঘটনাস্থলে থাকা শিম গাছের শুকনা লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখেন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু ঘটনাস্থলের পাশে ধান ক্ষেতে ফেলে দেন। এরপর ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং ভিকটিমের গায়ে থাকা রক্তমাখা জ্যাকেট (ট্র্যাকস্যুট জাতীয়) নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরবর্তীতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পথে ছয়ঘড়িয়া গ্রামের একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে রক্তমাখা জ্যাকেট ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নম্বর প্লেট আসামি তার নিজ শয়ন ঘরে রাখেন । এরপর ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে নাটোর জেলার লালপুর থানাধীন মোহরকয়া গ্রামের জনৈক মো. ফারুক শেখের (২৮) বাড়িতে রেখে আসেন।

পরে আসামি সম্রাটের (২৮) স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত সোনালী রংয়ের সিম্ফোনি মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল, রক্তমাখা জ্যাকেট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়।

আসামি সম্রাট এ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।