ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি : সংগৃহীত

ইতিহাস গড়তে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দরকার ছিল মাত্র একটি গোল, খেলার ৮৯ মিনিটে হেডের মাধ্যমে তা পেয়েও যান। কিন্তু দলের জয় তখনো নিশ্চিত হয়নি, সেই দায়িত্বও নিলেন। যোগ করা সময়ের ছয় মিনিটে আবার হেডে গোল করে জয় ছিনিয়ে আনেন।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের ইউরো অঞ্চলের বাছাইপর্বে নিজেদের মাটিতে আয়ারল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারাল পর্তুগাল। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে রেকর্ডের পাশাপাশি দলের জয়ের নায়কও সিআরসেভেন। খবর প্রথম আলোর।

দলের প্রয়োজনের জ্বলে ওঠার এমন কীর্তি রোনালদোর নতুন নয়, তবে রেকর্ডটা অনন্য।

ইরানের আলী দাইয়ির ১০৯ গোলের রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন ইউরোতেই, গতকাল বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৫ মিনিটে পিছিয়ে পড়া পর্তুগালকে ৮৯ মিনিটে সমতায় ফিরিয়েই রেকর্ড গড়েন রোনালদো। ৯৬ মিনিটের গোলটি নিয়ে পর্তুগালের জার্সিতে এখন রোনালদোর গোলসংখ্যা ১১১।

এই রেকর্ডটার পেছনেও আরও কিছু রেকর্ড আছে রোনালদোর। সেসব রেকর্ড তুলে ধরেছে খেলাবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন।

১১১ গোল করতে পর্তুগালের জার্সিতে রোনালদোকে খেলতে হয়েছে ১৮০ ম্যাচ। আগের রেকর্ডধারী দাইয়ি ১০৯ গোল করতে ইরানের জার্সিতে খেলেছেন ১৪৯ ম্যাচ।

রেকর্ডে জানানো হয়, ১১১ গোলের মধ্যে ১৪টি রোনালদো করেছেন পেনাল্টি থেকে। ৩০ বছর হওয়ার আগে পর্তুগালের জার্সিতে ম্যাচপ্রতি গড়ে রোনালদোর গোল ছিল ০.৪৪টি (১১৮ ম্যাচে ৫২টি)। আর ৩০ পেরোনোর পর ৬২ ম্যাচে ৫৯টি, ম্যাচপ্রতি গড়ে ০.৯৫টি।

গতকালের দুই গোল নিয়ে ইউরোপ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ইতিহাসে রোনালদোর গোল ৩৩টি (৪২ ম্যাচে), যা ইউরোপে সর্বোচ্চ। সব মহাদেশ মিলিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে গোলের রেকর্ডে রোনালদো অবশ্য আছেন ৩ নম্বরে, তাঁর ওপরে আছেন গুয়াতেমালার কার্লোস রুইজ (৩৯ গোল) ও ইরানের আলী দাইয়ি (৩৫)।

ইউরোপ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের রেকর্ডে তো বটেই, ইউরোর বাছাইপর্বেও গোলের রেকর্ডে সবার ওপরে রোনালদো। সেখানে ৩৫ ম্যাচে তাঁর গোল ৩১টি।

রেকর্ডে জানানো হয়, পর্তুগালের জার্সিতে রোনালদোর হ্যাটট্রিকের সংখ্যা, ইউরোপে আর কোনো খেলোয়াড়ের জাতীয় দলে এত হ্যাটট্রিক নেই। এই ৯ হ্যাটট্রিকের মধ্যে দুই ম্যাচে রোনালদো গোল করেছেন ৪টি করে!

পর্তুগালের জার্সিতে ম্যাচের প্রথমার্ধে রোনালদোর গোল ৪৪টি। প্রথমার্ধে সবচেয়ে বেশি গোল এসেছে ২১ থেকে ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে (১৪টি)। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদোর গোল ৬৭টি। দ্বিতীয়ার্ধে সবচেয়ে বেশি গোল এসেছে ৭৬ থেকে ৮৫ মিনিটের মধ্যে (১৯টি)। ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট, অর্থাৎ ৭৫ মিনিট থেকে এর পরের সময়ে রোনালদো গোল করেছেন ৩৩টি!
রোনালদোর ১১১ গোলের ৫৯টি করেছেন ডান পায়ে, ২৫টি বাঁ পায়ে, ২৭টি এসেছে হেডে। আর ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় গেলে এই ১১১ গোলের ৮৭টি এসেছে দলের আক্রমণের শেষ আঁচড় হয়ে (ওপেন প্লে), ১০টি গোল এসেছে ফ্রি-কিকে, ১৪টি পেনাল্টিতে।