জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের বিষয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করা হচ্ছে। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

নেত্রকোনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে একটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়েছে। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ জঙ্গি তৎপরতায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। জঙ্গিদের ফেলে যাওয়া ছয়টি বোমাও ধ্বংস করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ জানায়, নেত্রকোনা থানার কাইলাটি ইউনিয়নের বাসাপাড়া গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের মৎস্য খামারে জঙ্গি আস্তানা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই মৎস্য খামার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে লিজ নিয়ে শাহজালাল নামের এক ব্যক্তি মৎস্য চাষ ও পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন।

অভিযানের একটি মুহূর্ত। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

৫ জুন নরসিংদীর রায়পুরা থানা-পুলিশের অভিযানে শাহজালাল একটি বিদেশি অস্ত্রসহ রায়পুরায় গ্রেপ্তার হন। সে সময় তিনি নিজেকে ফাহিম ওরফে আরিফ নামে পরিচয় দেন। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই মৎস্য খামারে অবস্থানরত জঙ্গি দলের সদস্যরা গা ঢাকা দেয়।

৮ জুন (শনিবার) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আব্দুল মান্নান পুলিশকে জানান, তাঁর খামার লিজ নেওয়া ব্যক্তি অস্ত্রসহ নরসিংদী জেলা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে খামারের গেট তালাবদ্ধ পায়। পরে খামারে তল্লাশি চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ১৭টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

অভিযানের একটি মুহূর্ত। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের তালা ভেঙে ঢুকে সেখানে ওয়াকিটকি, হাতকড়া, প্রশিক্ষণ বেল্ট, হেভারস্যাক, কালো স্কচ টেপ দিয়ে মোড়ানো বোমাসদৃশ বস্তু দেখতে পায় পুলিশ। এ ছাড়া জঙ্গি প্রশিক্ষণের অনেক সামগ্রীও পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ৮ জুন রাতে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ), সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ পুলিশের অন্যান্য দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে উদ্ধার বিভিন্ন সরঞ্জাম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

৯ জুন (রোববার) ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি মো. শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম (বার) পিপিএম, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অ্যাডিশনাল ডিআইজি আসাদুল্লাহ চৌধুরী বিপিএম পিপিএমসহ এটিইউর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ অন্যান্য দল দিনব্যাপী অভিযান চালায়।
অভিযানের একটি মুহূর্ত। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, জঙ্গি প্রশিক্ষণের সামগ্রী ছাড়াও ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, রামদা, ইলেকট্রিক করাত, বাইনোকুলার, জিহাদি বই এবং ছয়টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করে।