নিরুদ্দেশ মাসুদ আলমকে পরিবারের কাছে ফেরত দেয় ডিবি। ছবি: ডিএমপি নিউজ

রাজধানীর ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাইস্কুল ও সিটি কলেজ থেকে পাস করে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করা নিরুদ্দেশ মাসুদ আলমকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।

আজ শনিবার স্পেশাল ব্রাঞ্চের তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের স্পেশাল অপারেশন টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রাকিবুল হাসানের নেতৃত্বে আবদুল গনি রোডের রেল ভবনের সামনে থেকে মাসুদ আলমকে উদ্ধার করা হয়।

গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মশিউর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-সেবা ডিএমপি নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের ২৫ জুলাই মাসুদ আলম ইন্দিরা রোডের নিজ বাসা থেকে নিরুদ্দেশ হন। তাঁর খোঁজ না পেয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তাঁর পরিবার। বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছিল। দীর্ঘ সময় সন্তানের কোনো খবর না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধ মা স্ট্রোকে প্যারালাইজড হয়ে যান। আর বাবা প্রায় অন্ধ।

তিনি আরও বলেন, স্কয়ার হাসপাতাল, আড়ং ও বাংলালিংকে চাকরি করা উচ্চশিক্ষিত এ যুবককে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। দীর্ঘ এ সময় আলোর নিচে অন্ধকার হয়ে তিনি সাংবাদিক ও পুলিশের চোখের আড়ালে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হোটেল বয় হিসেবে কাজ করেছেন। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে তিনি মাজার ও মন্দির থেকে খাবার সংগ্রহ করে খেয়েছেন। কখনো রাজধানীর ইত্তেফাক অফিসের নিচে, আবার কখনো বিভিন্ন ফুটপাতে মশা-মাছির সাথে জীবনযাপন করেছেন।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, মাদক ব্যবসা অথবা অন্য কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজে জড়িড়ে নিরুদ্দেশ হতে পারে মাসুদ আলম—এমন আশঙ্কা নিয়ে তাঁকে খুঁজছিল অনেক সংস্থা। আজ শনিবার স্পেশাল ব্রাঞ্চের তথ্যের ভিত্তিতে আবদুল গনি রোডের রেল ভবনের সামনে থেকে তাঁকে উদ্ধার করে ডিবি। এরপর তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁর বাবা, বোন ও ভগ্নিপতি সাংবাদিক রাকিব খানের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

দীর্ঘদিন পর তাঁকে ফিরে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আপ্লুত হয়ে পড়েন। গোয়েন্দা পুলিশের এমন মানবিক কাজে খুশি হয়ে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদের ভাষা যেন তাঁদের চোখের অশ্রু হয়ে বের হয়ে আসছিল।