পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার জিয়া। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

নাটোরের লালপুর থানার পুলিশ সাবেক স্ত্রী ও তাঁর চাচাতো বোনকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করার দায়ে মো. জিয়াউর রহমান জিয়া (৪১) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।

জানা গেছে, লালপুরের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা জিয়ার সঙ্গে আট বছর আগে একই উপজেলার দুড়দুড়িয়া গ্রামের মোছা. রিমা ইয়াসমিনের (২৭) বিয়ে হয়। রিমা ও জিয়ার সংসারে একটি ছেলেসন্তান আছে। তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় এবং জিয়ার মাদকের ঘটনায় জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে থাকার কারণে রিমা তাঁর বাবার বাড়িতে চলে আসেন। আনুমানিক ৩ মাস আগে রিমা তাঁর স্বামীকে ডিভোর্স দেন।

১৯ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৭টার সময় রিমা তাঁর চাচা মো. বেলাল হোসেন লালনের বাড়িতে টিভি দেখার সময় জিয়া সেখানে উপস্থিত হয়ে ঘরের বাইরে থেকে রিমার নাম ধরে ডাক দিলে রিমা ঘরের বাইরে দরজার সামনে এসে জিয়ার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে জিয়া হাতে কাচের বোতলে থাকা অ্যাসিড রিমার মুখে ছুড়ে মারলে তাঁর মুখমণ্ডলের ডান সাইড, গলাসহ বুক এবং ডান হাতের উপরিভাগ ঝলসে যায়। এ সময় রিমার পাশে তাঁর চাচাতো বোন মোছা. মাইমুনা খাতুনের (৩) কপালসহ বাম চোখ ও মুখমণ্ডলে অ্যাসিড লাগে। রিমা ও মাইমুনার চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত হলে জিয়া ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরিবারের লোকজন পরে রিমা ও মাইমুনাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তাঁরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় রিমার বাবা মো. রান্টু মণ্ডল ২০ ডিসেম্বর লালপুর থানায় জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার পর নাটোর জেলার পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলামের সার্বিক দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ও অপারেশন পরিকল্পনায় লালপুর থানার ওসি ও অফিসার-ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস আভিযানিক দল অভিযুক্ত জিয়াকে গ্রেপ্তারে অপারেশন শুরু করে। বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় দ্রুততর সময়ের মধ্যে জিয়াকে ২১ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানাধীন ভারতীয় সীমান্ত এলাকার কাছ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি জিয়া অ্যাসিড নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেন। তাঁকে যথানিয়মে আদালতে সোপর্দ করা হবে।