রাজধানীসহ সারা দেশে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার একাধিক সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য জানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের প্রধান উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন। খবর ডিএমপি নিউজের।

তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার রাজধানীর সবুজবাগ থানার বাসাবো এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর একটি অংশ নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার সক্রিয় সদস্য সোয়েব আখতার ওরফে টুটুলকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার টুটুল নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা। সে ও তার অপরাপর পলাতক সহযোগীরা নব্য জেএমবির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও চেষ্টা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিল।

এর আগে ২২ অক্টোবর রাজধানীর মুগদা থানা এলাকা থেকে নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম। আলী নব্য জেএমবির আদর্শ প্রচারের উদ্দেশ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একাধিক গ্রুপ, চ্যানেল ও আইডি পরিচালনা করত। এ সকল চ্যানেলের মাধ্যমে সে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসর ভাবাদর্শ প্রচার করত। এ-সংক্রান্তে রাজধানীর মুগদা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়।

গ্রেপ্তার আলীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২৫ অক্টোবর পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানা এলাকা থেকে নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য সজীব ওরফে যায়েদ ইবনে ইসমাঈলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে মোহাম্মদ আলীর সক্রিয় সহযোগী এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন উগ্রবাদী কন্টেন্ট অনুবাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলো।

সজীবকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ নভেম্বর রংপুর মহানগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে একই গ্রুপের অপর এক সদস্য মুহাম্মদ নাঈম হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার থেকে মিডিয়া শাখার কাজে ব্যবহৃত একাধিক ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ নভেম্বর টঙ্গী পূর্ব থানার টঙ্গী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ গ্রুপের আরেক সদস্য হাসিব খান ওরফে বাধনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হাসিব খানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার সবুজবাগ থানার বাসাবো এলাকা থেকে সোয়েব আখতার ওরফে টুটুলকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের ভাবধারা অনুসারী নব্য জেএমবির একাধিক সদস্যের যোগাযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তাররাসহ তাদের অপরাপর পলাতক সহযোগীরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ও প্রোটেকটেড টেক্সট অ্যাপসের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে সংগঠনের উগ্রবাদী লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করত।

উল্লেখ্য, এ-সংক্রান্ত রাজধানীর মুগদা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত চলমান রয়েছে।