খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম (বার), পিপিএম তাঁর সম্মানে আয়োজিত জেলা পুলিশের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম (বার), পিপিএম নড়াইল জেলা পুলিশের রিজার্ভ অফিস ও হিসাব শাখা পরিদর্শন করেছেন। ২৬ জুন (সোমবার) এই পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা পুলিশ জানায়, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম (বার), পিপিএম নড়াইল জেলা পুলিশ লাইনসে পৌঁছালে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে স্বাগত জানান পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন। পরে তিনি জেলা পুলিশের নান্দনিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রিয়াজুল ইসলাম কুচকাওয়াজে অধিনায়ক ছিলেন।

পরিদর্শনকালে ডিআইজি নড়াইল জেলা পুলিশে কর্মরত কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায়ের প্যারেডের দক্ষতা মূল্যায়ন করেন। এ সময় তিনি জেলার সব পুলিশ সদস্যের পেশাদারত্ব ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে বলেন।

খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম (বার), পিপিএম তাঁর সম্মানে আয়োজিত জেলা পুলিশের কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পরে পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুনের সভাপতিত্বে পুলিশ লাইনসে অনুষ্ঠিত ‘আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম (বার), পিপিএম প্রধান অতিথি ছিলেন।

ডিআইজি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নড়াইল জেলা ছোট হলেও ঐতিহ্যবাহী জেলা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে পদ্মা সেতু হওয়ার পর নড়াইল এখন একটি তাৎপর্যপূর্ণ জেলা ও উন্নয়নের গেটওয়েতে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। যাঁদের অবদানে আমাদের ভিত্তি রচিত হয়েছে, তাঁদের প্রতি সবার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা যাতে ঠিক থাকে, কোনো রকম অরাজকতা যাতে সৃষ্টি না হয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে বজায় থাকে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে সমৃদ্ধ হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে কোনো অবনতি না ঘটে, সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১-এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

‘আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মতবিনিময় সভা’য় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মাদক নির্মূল প্রসঙ্গে ডিআইজি বলেন, মাদকমুক্ত নড়াইল গড়তে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকেরাই যথেষ্ট। আপনাদের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। এ সময় তিনি মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাইবার ক্রাইম, বাল্যবিবাহ, ইভ টিজিং, মিডিয়া প্রোপাগান্ডাসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ রোধে পুলিশ, আনসার, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সকলকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান‌।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খাঁন নিলু, নড়াইল সদর পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, মাননীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার বাবা গোলাম মোর্তুজা স্বপন, জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট বিকাশ চন্দ্র দাস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সঞ্জীত কুমার দাশ, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি ও আব্দুল হাই ডিগ্রি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মল্লিক, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হাসানুজ্জামান, লোহাগড়া উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান রুনু, কালিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ ঘোষ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা, প্রতিটি ইউনিয়নের আনসার কমান্ডাররা, আনসার সহকারী কমান্ডাররা, ইউনিয়ন ভিডিপি দলনেতা ও দলনেত্রীরা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক এবং গ্রাম পুলিশের সদস্যরা।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত অতিথি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এ ছাড়া নড়াইল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. দোলন মিয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়া সার্কেল) প্রণব কুমার সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার(প্রবেশনার) দেবব্রত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।