পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার দুই প্রতারক। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

নড়াইলে এক প্রতারণার মামলায় ৯টি মোবাইল ফোন, ১৬টি সিমসহ দুজন অনলাইন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে জেলা-পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ ডিসেম্বর মো. রেজওয়ান সিদ্দিকি ইমরান (৩২) নামের এক ব্যক্তি “ইলোরা ফ্যাশন” নামক ফেসবুক পেজে বিভিন্ন প্রকার কম্বলের বিজ্ঞাপন দেখে ১ হাজার ৫৫০ টাকা মূল্যের ২টি সাইজের কম্বল নেওয়ার জন্য অর্ডার দেন।

প্রতারক চক্র তাকে ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে কুরিয়ার খরচ বাবদ অগ্রিম টাকা চায়।

ভুক্তভোগী তাদের কথা মতো “নগদ” একাউন্টে টাকা পাঠান। প্রতারক চক্র ডেলিভারিম্যান পরিচয় দিয়ে ভুক্তোভোগীকে কোম্পানি থেকে কোড নম্বর সংগ্রহ করে তাকে দিতে বলে। কোড নম্বর ছাড়া কোনো কম্বল দেওয়া যাবে না বলে জানায়। পরে ভুক্তভোগী কোম্পানি থেকে কোড নম্বর সংগ্রহের জন্য ফোন করলে প্রতারক চক্র পুনরায় টাকা চায়। এভাবে বিভিন্ন ছলচাতুরী করে প্রতারক চক্র ভুক্তভোগী মো. রেজওয়ান সিদ্দিকি ইমরানের কাছ থেকে ৬টি ধাপে সর্বমোট ২৭ হাজার ৯০০ টাকা “নগদ” একাউন্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।

কম্বল কেনা বাবদ টাকা পাওয়ার পর প্রতারক চক্র ভুক্তভোগীর কল রিসিভ করেনি এবং কোনো কম্বল পাঠায়নি।

এ ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় এজাহার দায়ের করলে নড়াইল সদর থানায় একটি প্রতারণার মামলা রুজু হয়।

মামলা হওয়ার পর নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোহা. মেহেদী হাসানের নির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নি.) ফিরোজ আহম্মেদসহ নড়াইল জেলার গোয়েন্দা শাখা ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম ওই প্রতারক চক্রকে শনাক্ত এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ ৯ জানুয়ারি ভোর ৪টা ১০ মিনিটে মো. শাহজালাল শেখ (২৭) ও মো. শাহ্ জামান (২৩) নামের দুই প্রতারককে নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন যাদবপুর এলাকায় তাদের বসতবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৯টি মোবাইল ফোন ও ১৬টি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল সিম উদ্ধার করে।

পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এই চক্র দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষকে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মোবাইল সিমের বিকাশ অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ বছরে সর্বমোট ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৬ টাকা লেনদেন হয়েছে।

উল্লেখ্য, ধৃত আসামি মো. শাহজালাল শেখের নামে ২০১৮ সালে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় এবং ২০২২ সালে হাজারীবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক পৃথক ২টি প্রতারণার মামলা আছে।