নড়াইল পুলিশ ও ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

নড়াইলে পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিম কার্ড, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, ট্যাবসহ দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে। নড়াইলের কালিয়া ও খুলনা মহানগরী এলাকায় ১০ জানুয়ারি (বুধবার) অভিযানটি পরিচালিত হয়।

গ্রেপ্তার দুই আসামির নাম মো. সবুজ শেখ (৩৫) ও মো. মাহফুজুর রহমান (২৩)। সবুজের কাছ থেকে ৯০টি অবৈধ সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। আর মাহফুজুরের কাছ থেকে ৩৬টি অবৈধ সিম কার্ড, দুটি ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার ও দুটি বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন ট্যাব উদ্ধার করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোহা. মেহেদী হাসান। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

জেলা পুলিশ জানায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর থানার তৈয়ব আলী মোল্লা ‘ডিএসএলআর ক্যামেরা বাজার স্টোর’ থেকে ক্যামেরা কিনতে অগ্রিম ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু তাঁকে ক্যামেরা না দিয়ে প্রতারক চক্র তৈয়বকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আরও ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তৈয়ব আলী নড়াইল সদর থানায় অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান।

ওই দুই আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত অন্যের নামে নিবন্ধিত সিম বিক্রেতাকে আটক করতে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযান অব্যাহত রাখেন। এরপর নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহা. মেহেদী হাসানের নির্দেশে কাজ শুরু করে জেলার সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশ সেল ও ডিবি। পরে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও ডিবি ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে নড়াইলের কালিয়া থানার যাদবপুর বাজারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সবুজ শেখকে ৯০টি অবৈধ সিমসহ গ্রেপ্তার করে।

আসামি সবুজ শেখের দেওয়া তথ্যমতে অবৈধ সিম বিক্রি চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করতে খুলনা মহানগরীতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও ডিবি একই দিন রাত সাড়ে ১০টায় অভিযান চালিয়ে মাহফুজুর রহমানকে রূপসা পশ্চিম ঘাট এলাকা থেকে ৩৬টি অবৈধ সিম, দুই ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, দুটি বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন ট্যাবসহ গ্রেপ্তার করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মাহফুজুর জানান, তিনি ২০১৯ সালে রবি কোম্পানির খুলনা অফিসে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ (এসআর) পদে চাকরি করতেন। এর সুবাদে তাঁর কাছে সিম নিবন্ধনের ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার ও ট্যাব থাকত। পরে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিতে তিনি কোম্পানির স্ক্যানার ও ট্যাব নিয়ে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি প্রতারণা করে আসছিলেন। তাঁর কাছ থেকে ৬০০ টাকায় সিম কিনে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করতেন সবুজ শেখ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নজর এড়াতে তাঁরা অন্যের নামে নিবন্ধনকৃত সিম ব্যবহার করতেন।