গ্রেপ্তার ইকরামুল গাজী

নড়াইলে পুলিশ দেলোয়ার ওরফে দেলবার গাজী (৫৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে। এ ঘটনায় নিহত দেলোয়ারের সহোদর ইকরামুল গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২১ জুন (বুধবার) রাতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে নড়াইল সদর থানার বিছালি ইউনিয়নের মধুরগাতি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তিনি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

জেলা পুলিশ জানায়, নড়াইল সদর থানার বিছালী ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামে একটি মাছের ঘেরের পাড় থেকে ৩০ মে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দেলোয়ার গাজীর লাশ উদ্ধার হয়। তিনি পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। ২৯ মে বিকেলে বাড়ি থেকে ভ্যান চালাতে বের হয়ে আর ফেরেননি। এ ঘটনায় ৩১ মে দেলোয়ারের সেজ ভাই গাজী মনিরুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেছেন।

সংবাদ পেয়েই নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারে জেলা পুলিশের একাধিক টিমকে নির্দেশনা দেন। তাৎক্ষণিক কাজ শুরু করে দেয় জেলা পুলিশ। নড়াইল সদর থানা এলাকাসহ আশপাশের থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনার সময় ৩০ মে বেলা পৌনে ৩টার দিকে নড়াইল সদর থানাসংলগ্ন যশোরের অভয়নগর থানার বুনোরামনগর মাদ্রাসার পাশে ফাঁকা জায়গা থেকে নিহত দেলোয়ারের ভ্যান উদ্ধার করা হয়।

ঘটনা তদন্তের সময় জানা যায়, ইকরামুল গাজীর স্ত্রীর সঙ্গে নিহত দেলোয়ার গাজীর স্ত্রীর মাঝেমধ্যেই সাংসারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়। দেলোয়ারের কাছে ইকরামুল বিষয়টির প্রতিকার চান। একাধিকবার জানানোর পরও দেলোয়ার নির্বিকার থাকায় ইকরামুলের স্ত্রীর রাগ করে বাবার বাড়ি চলে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ারকে শায়েস্তা করতে ইকরামুল পরিকল্পনা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ মে রাত ৯টার দিকে দেলোয়ারকে ইকরামুলের বন্ধু কৌশলে ডেকে নেন। এ সময় ইকরামুল ও তাঁর এক সহযোগী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ারের ভ্যানে চড়ে আটঘরা গ্রাম থেকে নাউসোনা মহাশ্মশানগামী রাস্তা ধরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে ইকরামুল গাজীর বন্ধু গামছা দিয়ে পেছন থেকে দেলোয়ারের গলায় পেঁচিয়ে ধরে। ইকরামুল গামছার অপরপ্রান্ত ধরে টান দেন। এতে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান দেলোয়ার। এরপর সবাইকে বিভ্রান্ত করতে দেলোয়ারের ভ্যানটি পাশের জেলা যশোরের অভয়নগর থানার বুনোরামনগর এলাকায় ফেলে আসেন আসামিরা। ইকরামুল গাজী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।