পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডিকে গ্রেপ্তার নিয়ে ডিএমপির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ডিএমপি নিউজ

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকা মারার স্প্রের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড নামের কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও এমডি ফরহাদুল আমিন।

ডিএমপি নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, গত ২ জুন রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকা মারার স্প্রের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ঘটনায় গত ৫ জুন ভাটারা থানায় দুই শিশুর পরিবার একটি মামলা করে। মামলার পর ভাটারা থানা ও গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেন। তাঁরা নিজস্ব গাড়িতে টাঙ্গাইল, নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর কারণে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিল না। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ভাটারা থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরও বলেন, অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট সমৃদ্ধ তেলাপোকা মারার এই পেস্টিসাইড বড় গার্মেন্টস, বীজ গুদাম বা অনাবাসিক জায়গাতে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু ঘরে এ জাতীয় বিষাক্ত উপাদান ব্যবহার করা যায় না। বাসাবাড়িতে এগুলো ব্যবহার করলে ব্যবহৃত আবাসস্থল ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়। এরপর দীর্ঘ সময় দরজা-জানালা খোলা রাখতে হয়, যাতে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে। বসুন্ধরার ওই বাসায় ব্যবহৃত তেলাপোকানাশক এ পেস্টিসাইডে রাসায়নিক উপাদান সঠিক অনুপাতে ছিল না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হারুন অর রশীদ বলেন, এই বিষাক্ত উপাদান কোথা থেকে কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, এর অনুমোদন ছিল কি না, এর রাসায়নিক অনুপাত সঠিক ছিল কি না, মানবদেহের জন্য এগুলো কতটা ক্ষতিকর, এই বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা হবে।