কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মাধ্যমে শীতবস্ত্র পেয়ে খুশির ঝিলিক দেখা যায় বিভিন্নজনের চোখে-মুখে। ছবি: পুলিশ নিউজ

‘হামার এত্ত্যি কাহো কম্বল দেই নাই বাহে, তোমরাই পেত্তম আইলেন’।

কথাগুলো বলছিলেন ফুলজান। তাঁর বয়স প্রায় ৯০ ছুঁইছুঁই। তিস্তা নদীর পাড়ে রাজারহাট থানার বিদ্যানন্দ রথি গাবুর এলান গ্রামের বাসিন্দা।

জেলা পুলিশের কম্বল বিতরণের সংবাদ পেয়ে ছুটে আসেন এ নারী। কম্বল পেয়ে বলেন, ‘ঠান্ডার মদ্যে বাইরোত বেরাবার পাও না। ঘরো তো বাতাস নাগে, ঠান্ডাত হামার খুব দুঃখ।’

কম্বল পেয়ে ফুলজানের মুখে ফুটে ওঠে স্মিত হাসি।

বিদ্যানন্দ রথি শোলাগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নজির হোসেন। তাঁর এক পা নেই। কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, ‘ঠিকমতো হাটপার পাও না, কোনো কাজকারবার পাও না কম্বল কিনিম কোট থাকি? এই গেরামোত কায়ো আইসে না কম্বল দিবার, এই কম্বল পেয়া মোর অনেক উপকার হইবে।’

আশেপাশের আরও কয়েক গ্রামের বয়োবৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী অনেকেই এভাবেই কম্বল নিতে এসে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে জেলা পুলিশকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানার বিদ্যানন্দ এলাকায় শুক্রবার তিস্তা নদীর পাড়ে ২০০ পরিবারের মধ্যে শীতের উষ্ণ কম্বল বিতরণ করেন কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লা হিল জামান, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সুধীজন।

প্রত্যন্ত তিস্তার পাড়ে বিকাশের সহায়তায় ২০০ পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের সময় পুলিশ সুপার বলেন, ‘জেলা পুলিশ সবসময় কুড়িগ্রামের সন্মানিত নাগরিকদের শীতের উষ্ণ কম্বল বিতরণ করার মাধ্যমে তাদের শীত কিছুটা নিবারণের আপ্রাণ প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে। সকল থানা সদরসহ থানা অধিক্ষেত্রের চরসমূহে ৩ হাজার মানুষকে জেলা পুলিশের পক্ষে উষ্ণ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।’

এ কার্যক্রম জেলা পুলিশ ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাবে মর্মে প্রেরণা ও প্রেষণা ব্যক্ত করেন এসপি।