মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তথ্যপ্রযুক্তির সব সুবিধা ব্যবহার করে মামলা ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

গতকাল শনিবার বিকেলে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আবদুল হামিদ বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘দেশের সব আদালতের কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে বিচার কার্যক্রমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।’

সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু কোর্ট অব রেকর্ড, সেহেতু এর সব নথিকে ডিজিটাল নথিতে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সব কার্যক্রমকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করাও জরুরি বলে উল্লেখ করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। খবর বাসসের।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আন্তরিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি জানান, বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক এবং এ লক্ষ্য অর্জনে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

আবদুল হামিদ বলেন, বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে না হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশে সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে সংবিধানকে নানাভাবে কাটাছেঁড়া করে গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে।

১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করার পর থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প সময়ে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এবং জাজেস কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের স্থাপনার ছবিসংবলিত স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।