অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দের সঙ্গে ডগ হ্যান্ডলার হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সাত নারী পুলিশ সদস্য। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন যুগের সূচনা করেছেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সাত নারী পুলিশ সদস্য। প্রথমবারের মতো অপরাধ দমনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ন্ত্রক (ডগ হ্যান্ডলার) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ওই নারী পুলিশ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) এয়ারপোর্ট ১৩ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক কমান্ডিং অফিসার (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) তোফায়েল আহম্মদ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাঁদের হাতে বেসিক কেনাইন হ্যান্ডলার কোর্সের (ফিমেল) সার্টিফিকেট তুলে দেন।

অপরাধ দমনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক নারী পুলিশ সদস্য। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

তাঁদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন দুই খ্যাতনামা পেশাদার ডগ স্কোয়াড প্রশিক্ষক টনি ব্রাইসন (যুক্তরাজ্য) ও মেলিন ব্রডউইক (নিউজিল্যান্ড)। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন ওই নারী পুলিশ সদস্যরা।

বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রমকে আরও বেগবান এবং অপারেশনাল টিমকে কারিগরি সহায়তা দিতে কাজ করে থাকে পুলিশের কেনাইন ইউনিট (ডগ স্কোয়াড)। বর্তমানে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ছাড়াও ডিএমপি ও র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড রয়েছে।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পাঁচ নারী পুলিশ সদস্য। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালে দুটি ল্যাব্রেডর, দুটি জার্মান শেফার্ড ও চারটি বেলজিয়ান ম্যালিনয়েস জাতের কুকুর এবং ১৬ জন হ্যান্ডলার নিয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কেনাইন ইউনিট যাত্রা শুরু করে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় যাত্রী, সহযাত্রী ও তাঁদের ব্যাগ স্ক্রিনিংয়ের কাজ করে থাকে ডেডিকেটেড এই ডগ স্কোয়াড। এ ছাড়া ক্যানোপি নিরাপত্তা, পার্কিং এরিয়া এবং আগত যানবাহনে বিস্ফোরক পদার্থের উপস্থিতি শনাক্তকরণ, ব্যাগেজ বেল্ট এলাকার নিরাপত্তা রক্ষা এবং ভিভিআইপি নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড। এই ইউনিটে নারী হ্যান্ডলারদের সংযোজন বিমানবন্দরে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের যৌথ উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজিত হয়। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডগ স্কোয়াডে ২০২৫ সালের মধ্যে কুকুরের সংখ্যা ৬৬টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় টার্মিনালের সম্ভাব্য বিশাল অপারেশনের কথা মাথায় রেখে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডস থেকে আরও অন্তত ১৫টি কুকুর এই স্কোয়াডে যুক্ত হবে। বর্তমানে স্কোয়াডে থাকা কুকুরগুলো বিস্ফোরক শনাক্তকরণে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও শিগগির নারকোটিক্স ডগ, ট্র্যাকিং ডগ, কারেন্সি স্নিফিং ডগ এই বহরে যুক্ত হবে। এসব প্রশিক্ষণে কারিগরি ও লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে এয়ারপোর্ট এপিবিএনকে সহায়তা করবে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। একটি পরিপূর্ণ ডগ স্কোয়াড বিমানবন্দরে নাশকতা, মাদক পাচার, স্বর্ণ চোরাচালান, মুদ্রা পাচার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।