বক্তব্য দিচ্ছেন ডিএমপি কমিশনার। ছবি: ডিএমপি নিউজ

জাতীয় ঈদগাহে সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ৫ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। এ ছাড়া রাজধানীর প্রতিটি ঈদ জামাত ঘিরে আলাদা নিরাপত্তাব্যবস্থার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ডিএমপি কমিশনার। খবর ডিএমপি নিউজের।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানীর প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। জাতীয় ঈদগাহে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান বিচারপতি, মাননীয় বিচারপতিবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ, ঢাকাস্থ মুসলিম দেশের কূটনীতিকবৃন্দ এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি ঈদ জামাত আদায় করবেন। প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি একত্রে এই ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

গৃহীত নিরাপত্তাব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ঈদের প্রধান জামাতসহ রাজধানীর সকল মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদগাহ ও আশপাশ এলাকা স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ইকুইপমেন্ট ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করানো হবে। পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া ড্রোন প্যাট্রলিং ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। পর্যাপ্তসংখ্যক ইউনিফর্মধারী পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে জাতীয় ঈদগাহের চারপাশে বহিঃবেষ্টনী ও আন্তবেষ্টনী গড়ে তোলা হবে। প্রবেশ গেটে মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ, এসবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সিভিল পোশাকে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সোয়াট টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্ট্যান্ডবাই থাকবে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবায় মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে।

তিনি বলেন, প্রধান ঈদ জামাত ঘিরে দশটি স্থানে পার্কিং ব্যবস্থা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক রমনা বিভাগ। ঈদ জামাত ঘিরে আটটি রাস্তা ডাইভারসন দেওয়া হবে, যাতে কোনো রকমের হয়রানি ছাড়া মুসল্লিরা আসতে পারেন। নারীদের জন্য নামাজের পৃথক ব্যবস্থা থাকবে, তাঁদেরকে নারী পুলিশ সদস্যরা তল্লাশি করবেন।

তিনি আরও বলেন, এবার ঢাকায় ১৮৪টি ঈদগাহে ও ১ হাজার ৪৮৮টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ঈদ জামাতের জন্য আলাদা নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। একটি জামাতও নিরাপত্তাবলয়ের বাইরে থাকবে না।

নাগরিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যাঁরা ঈদের নামাজে অংশ নিতে আসবেন, তাঁরা আমাদের তল্লাশি কার্যক্রমে সাহায্য করবেন। কেউ দাহ্য বা ধারালো বস্তু নিয়ে আসবেন না। যেকোনো সমস্যা হলে পুলিশকে জানাবেন। জামাত থেকে বের হওয়ার সময় ধৈর্যের সঙ্গে সুশৃঙ্খলভাবে বের হবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কোনো তৎপরতার তথ্য নেই। পাশাপাশি কোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতার তথ্যও নেই। তারপরও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সব বিষয় বিবেচনায় রেখেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাস মালিক সমিতিসহ সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা আমাদের নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজধানীর সব যাত্রীবাহী বাস কাউন্টার ও স্টেশনগুলোতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তৎপর রয়েছে। কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান বিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার); যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ, বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।