জাতিসংঘ শান্তিপদকজয়ী সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন মালির জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের পুলিশ প্রধান পুলিশ কমিশনার জেনারেল বেটিনা প্যাট্রিসিয়া বুগানি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ ফর্মড পুলিশ ইউনিট-২ (রোটেশন-৪)-এর ১৪০ জন সদস্য পেয়েছেন জাতিসংঘ শান্তিপদক। ২৮ নভেম্বর (সোমবার) এক অনুষ্ঠানে তাদের পদক পরিয়ে দেন মালির জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের পুলিশ প্রধান পুলিশ কমিশনার জেনারেল বেটিনা প্যাট্রিসিয়া বুগানি।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মালিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মিনুসমা ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে পেশাদারত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদক দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বেটিনা প্যাট্রিসিয়া বুগানি প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এ উপলক্ষে ব্যানএফপিইউ-২ আয়োজিত মেডেল প্যারেড ও শান্তিপদক প্রদান অনুষ্ঠানে বেটিনা প্যাট্রিসিয়া বুগিনা প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মিনুসমা হেডকোয়ার্টার্সের এফপিইউ কো-অর্ডিনেটর হাম্মানজাবু স্যামুয়েল, তিন্বুক্তো রিজিয়নের রিজিওনাল কমান্ডার সানাও দিওফ, রিজিওনাল আ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার, ডেপুটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জাবেদ আসলাম ও মিলিটারি কন্টিনজেন্টের কমান্ডাররা। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন, মেয়র ও জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধান অতিথি রাজধানী বামাকো থেকে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরে মিনুসমা গুন্দাম ক্যাম্পের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। ব্যানএফপিইউ-২-এর কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান প্রধান অতিথিকে হেলিপ্যাডে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ও মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্যারেড গ্রাউন্ডে নিয়ে আসেন। সেখানে প্যারেড কমান্ডার ব্যানএফপিইউ-২-এর অপারেশনস্ অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম ও বর্ণিল প্যারেড প্রদর্শন করেন।

জাতিসংঘ শান্তিপদকজয়ী সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন মালির জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের পুলিশ প্রধান পুলিশ কমিশনার জেনারেল বেটিনা প্যাট্রিসিয়া বুগানি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মনোমুগ্ধকর প্যারেড প্রদর্শনী শেষে বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের ১৪০ জন পুলিশ সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে প্রতিকূল পরিবেশেও অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ পরিচালনা করে স্থানীয় জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে ব্যানএফপিইউ-২-এর অপারেশনাল কর্মকান্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম যেমন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন, বিনা মূল্যে ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী বিতরণ, স্কুলে শিক্ষাসামগ্রী ও মসজিদে উপহারসামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম গ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শান্তিরক্ষা মিশনে নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ এবং তাদের দক্ষতা ও পেশাদারত্বেরও প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে সশস্ত্র সালাম দেওয়া হয়। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ব্যানএফপিইউ-২ (রোটেশন-৪)-এর কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অত্যন্ত পেশাদারত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। তিনি মিনুসমা কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানের অতিথিদের সঙ্গে পদকজয়ী শান্তিরক্ষীরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক ডিসপ্লের পর বৃক্ষরোপণ করা হয় এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। ব্যানএফপিইউ-২-এর কমান্ডার প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক ও উপহার প্রদান করেন।