সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ থেকে শনিবার নারী-শিশুসহ বহু মানুষকে করে উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: সিলেট জেলা পুলিশ

চারদিকে কেবল পানি, তীব্র স্রোত, বৃষ্টি| সেই সঙ্গে বজ্রপাত। নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক। উদ্ধারকাজ অথবা ত্রাণ তৎপরতার জন্য পাঠানো দল ফিরে না আসা পর্যন্ত আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

কাজ করতে হচ্ছে কোমর সমান পানিতে নেমে। ছবি: সিলেট জেলা পুলিশ

এ রকম ভয়াবহ প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে বন্যাকবলিতদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সিলেট জেলা পুলিশ। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম বার-এর সার্বিক নির্দেশনায় সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএমের তত্ত্বাবধানে গোয়াইনঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের সদস্যরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

শনিবার সারা দিন কোম্পানীগঞ্জে স্পিডবোট নিয়ে নারী-শিশুসহ বেশ কিছু মানুষকে উদ্ধার করেন জেলা পুলিশের সদস্যরা। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা বন্যার্তদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।

প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে বন্যা কবলিতদের জন্য খাবার পানি নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সিলেট জেলা পুলিশ

এর আগের দিন শুক্রবার পুলিশের সদস্যরা গোয়াইনঘাট থানাধীন ১ নং রুস্তুমপুর ইউনিয়ন এবং সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এর আওতাধীন ৭ নং নন্দীরগাঁও এবং ৮ নং তোয়াকুল ইউনিয়নের পানিবন্দী প্রায় ১৫০ পরিবারের সদস্য ও তাদের পালিত পশু স্পিডবোট, ভাড়া করা ইঞ্জিনচালিত নৌকা, বাল্কহেডের মাধ্যমে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। এ সময় পানিবন্দী মানুষকে শুকনা খাবার ও পানি সরবরাহ করেন গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল।

এ ছাড়া পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করে লোকজনকে তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়া হয়। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ এলাকার পানিবন্দী মানিুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজটি তদারকির জন্য জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের খাবার সরবরাহ করছে পুলিশ। ছবি: সিলেট জেলা পুলিশ

জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট থানা এলাকার পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম তদারকির জন্য সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মাহফুজ আফজালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের খাবার সরবরাহ করছে পুলিশ। ছবি: সিলেট জেলা পুলিশ

জেলার সীমান্তবর্তী থানা জকিগঞ্জে বন্যার পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে থানা-পুলিশের সকল সদস্যরা একযোগে কাজ চালিয়ে যান। জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে পুলিশের সদস্যরা মানুষকে শুকনা খাবার ও পানির বন্দোবস্ত করেন।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর প্রাপ্ত কল ও জেলায় ব্যবহৃত জরুরি নম্বরে বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেওয়া হয়।