শরীফুল হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার আসামি রাকিব ও জুয়েল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

গাজীপুরে ১০ দিনের মধ্যে শরীফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছয়জনকে।

গ্রেপ্তারকৃত ওই ছয় আসামি হলেন মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে জামাই শফিকুল (২৫), আফ্রিদি (১৯), মো. রাকিব হোসেন (২২), মো. রাজিব শেখ (২২), মো. জুয়েল রানা (২৭) ও মো. হানিফ (২৭)।

হত্যাকাণ্ডের শিকার অটোরিকশাচালক শরীফুল ইসলাম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

গাজীপুর জেলা পুলিশ জানায়, শরিফুল ইসলাম (২০) ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে তিনি অটোরিকশা নিয়ে বের হন। ওই দিন বিকেলে মো. রোমান হোসেন নামের এক ব্যক্তি অটোরিকশাটির মালিক মো. মোশারফ হোসেনকে মুঠোফোনে ফোন করে জানান যে অটোরিকশটি শ্রীপুর থানার বনখড়িয়া এলাকায় পড়ে আছে। পরদিন সকাল সাড়ে আটটার দিকে বনখড়িয়া বাজার এলাকা থেকে কিছু দূরে সরকারি গজারি বনের ভেতরে শরীফুলের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শরীফুলের বড় ভাই মো. সেকান্দার শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
শরীফুল হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার আসামি আফ্রিদি ও শফিকুল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ আরও জানায়, মামলা হওয়ার পর তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের এক পর্যায়ে ১৬ ডিসেম্বর ও ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে গাজীপুর, গাজীপুরের শ্রীপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার শরীফুল ঘটনার ১০-১২ দিন আগে কারিমা (১৮) নামের একটি মেয়েকে গোপনে বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কারিমার বড় ভাই খোরশেদ আলমের শ্যালক রাজিব শেখ (২২) শরীফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছমতের সঙ্গে যোগাযোগ করে শরীফুলকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তি করেন। পরবর্তীতে মামলার পলাতক আসামী আছমত ওরফে তারেক তাঁর সহযোগীদের নিয়ে শরীফুলকে শ্রীপুর থানার বনখড়িয়া এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে সরকারি গজারী বনে নিয়ে শরীফুলকে গলায় ধারালো অস্ত্র চালিয়ে হত্যা করা হয়।
শরীফুল হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার আসামি হানিফ ও রাজিব শেখ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামী আফ্রিদি ও শফিকুল ১৭ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত অপর চার আসামি রাকিব, রাজিব, জুয়েল ও হানিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৭ ডিসেম্বর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পলাতক আসামি আছমতকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা অর্থের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পরিকল্পনামাফিক এই নির্মম হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে।