হামাসের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজা সিটি চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলার দাবি করেছে ইসরায়েল বাহিনী। সেই সঙ্গে গাজায় সামরিক অভিযান আরও ‘জোরদার’ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। তবে হামাসের দাবি, যোদ্ধারা ইসরায়েলের সামরিক সরঞ্জাম ও সেনাদের বিরুদ্ধে ‘সফল অভিযান’ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি গাজা ইসরায়লের জন্য ‘অভিশাপ’ হয়ে দাঁড়াবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। খবর রয়টার্স, আল-জাজিরার।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, হামাসের প্রধান ঘাঁটিখ্যাত গাজা শহরকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলেছে তারা। সেই সঙ্গে তারা অস্ত্র, সামরিক পোস্ট এবং হামাসের অন্য যে কোনো অবকাঠামো ধ্বংস করতে অভিযান জোরদার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ইসরায়লের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, টানেল ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেশটির অনন্য কৌশল রয়েছে। ইসরায়লি বাহিনী গাজা শহরকে ঘিরে রেখেছে এবং সামনের দিকে চাপ দিচ্ছে।

ইসরায়লে মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির দাবি, সামরিক বাহিনী ‘হামাস ফাঁড়ি, সদরদপ্তর, লঞ্চ পজিশন এবং লঞ্চ অবকাঠামোতে আক্রমণ করছে’ এবং ‘মুখোমুখি লড়াইয়ে’ নিয়োজিত। তারা বেসামরিক নাগরিকদের দক্ষিণে সরে যেতে বলেছে।

যদিও ইসরায়লের ‘গাজা জয়ের স্বপ্ন’ অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটির সশস্ত্র শাখার মুখপাত্র আবু ওবাইদা বলেন, কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা ইসরায়লি সামরিক সরঞ্জাম ও সেনাদের বিরুদ্ধে ‘সফল অভিযান’ চালিয়ে যাচ্ছে।

টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক অডিওবার্তায় আবু ওবাইদা বলেছেন, হামাসযোদ্ধারা ‘বড় সংখ্যক’ ইসরাইলি বাহিনীকে হত্যা করেছে। তারা ইসরায়লি বাহিনীর ওপর ‘আর্মারবিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র, সরাসরি সংঘর্ষ এবং ড্রোন হামলার’ মাধ্যমে আক্রমণ করছে। ইসরায়লি সেনাদের সঙ্গে লড়াই করতে ‘আমাদের যোদ্ধারা আবির্ভূত হয়।’

এদিকে ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মিশরীয় রেড ক্রিসেন্ট থেকে রাফাহ ক্রসিং হয়ে ১০৬টি ত্রাণসহায়তার ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। যেগুলোয় শুকনো খাবার ছাড়াও সুপেয় পানি এবং চিকিৎসাসামগ্রী রয়েছে। পিআরসিএসের তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত মিশর থেকে গাজায় সফলভাবে পৌঁছানো মোট ট্রাকের সংখ্যা ৩৭৪টি। তবে অবরুদ্ধ গাজায় এখনো জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি মেলেনি।

অন্যদিকে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়লি বিমান হামলায় অন্তত ৯ হাজার ৬১ জন নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে ৩ হাজার ৭৬০ জনই শিশু। পাশাপাশি নিহতদের মধ্যে ২ হাজার ৩২৬ জন নারীও রয়েছেন। এই সময়ে দখলদার ইসরায়লি বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩২ হাজার ফিলিস্তিনি।