প্রতিবছরের মতো এবারও সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে বরণ করে নিতে অধীর অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছে। আনন্দ ও উৎসবমুখর ক্ষণ যেন শান্তিপূর্ণ এবং অপ্রীতিকর ও দুর্ঘটনামূক্তভাবে রাজধানীবাসী উদযাপন করতে পারে, সে জন্য কিছু নিরাপত্তা নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। খবর ডিএমপি নিউজের।

ডিএমপির নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় ও প্রকাশ্যে স্থানে কোনো ধরনের সভা-জমায়েত বা উৎসব করা যাবে না, উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না, কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো বা কেনাবেচা করা যাবে না।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর বহিরাগত ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন। রাত ৮টার পর প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।

নির্দেশনায় আরও জানানো হয়, গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে এসব এলাকায় বসবাসকারী ব্যক্তিরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নন, এমন ব্যক্তিদের রাত ৮টার পর ওই সব এলাকায় যেতে নিরুৎসাহিত করেছে ডিএমপি।

ডিএমপি জানিয়েছে, হাতিরঝিল এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং কোনো যানবাহন থামিয়ে অথবা পার্ক করে অবস্থান করা যাবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। আবাসিক হোটেলগুলো সীমিত আকারে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। ৩১ ডিসেম্বর ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেঁস্তোরা, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।

*ডিএমপির ট্রাফিক নির্দেশনা*
৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি মেনে চলতে রাজধানীবাসীর জন্য ট্রাফিক নির্দেশনাও দিয়েছে ডিএমপি। সে অনুসারে ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনে করে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। রাত ৮টা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং এলাকা ব্যবহার করা যাবে না।

৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত অন্য যেকোনো ব্যক্তি বা যানবাহন কেবল পুরোনো হাইকোর্ট-দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। উক্ত এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যান্য সব ক্রসিং বন্ধ থাকবে। এই সময়ে শাহবাগ, নীলক্ষেত ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, বক্শীবাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং এবং চাঁনখারপুল/শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না।

সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ডিসি ট্রাফিক (গুলশান) ০১৩২০-০৪৪৩৬০, এডিসি ট্রাফিক (গুলশান) ০১৩২০-০৪৪৩৬১, এসি ট্রাফিক (গুলশান) ০১৩২০-০৪৪৩৭২, এসি ট্রাফিক (মহাখালী) ০১৩২০-০৪৪৩৭৫, এসি ট্রাফিক (বাড্ডা) ০১৩২০-০৪৪৩৭৮, ডিসি ট্রাফিক (রমনা) ০১৩২০-০৪২২৬০, এডিসি ট্রাফিক (রমনা) ০১৩২০-০৪২২৬১, ডিসি (গুলশান) ০১৩২০-০৪১৪২০ ও ডিসি (রমনা) ০১৩২০-০৩৯৪৪০ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি।