পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার অটোরিকশাচালক হত্যার ৫ আসামি

গাজীপুরের কাশিমপুরে অটোরিকশাচালক হুমায়ুন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে কাশিমপুর থানা পুলিশ।

জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর থানাধীন লোহাকৈর নামক এলাকায় মাজারের পাশের পুকুরে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া যায়। কাশিমপুর থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে পিবিআইয়ের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করে। তার নাম হুমায়ুন কবির। তিনি অটোরিকশা চালাতেন।

হুমায়ুনের পরিবার জানায়, ৯ ফেব্রুয়ারি ভিকটিম হুমায়ুন কবির, বেলা পৌনে ১২টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে দেশীপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে পরে ফিরে আসেনা। এই তথ্যসূত্র ব্যবহার করে কাশিমপুর থানা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের কাজ শুরু করে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আলমগীর ও শামসুল নামে ছিনতাইকারী চক্রের দুজন সদস্যকে পৃথক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টুকু ও আল আমিন নামে আরও দুজন সদস্যকে বরিশালের উজিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া রফিক নামে আরেকজনকে সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হুমায়ুন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ঘটনার বর্ননা দেন। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৯ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ২টায় ভিকটিম হুমায়ুন অটোরিকশা নিয়ে সালনা ব্রিজের কাছে অবস্থান করছিলেন। এসময় তিনি আল-আমিনের কাছ থেকে ঝালমুড়ি কিনে খান । আল আমিন ঝালমুড়ি বিক্রেতার ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন।তিনি ঝালমুড়ির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন। ঝালমুড়ি খেয়ে ভিকটিম হুমায়ুন তার অটোরিকশায় যাত্রী হিসেবে শামসুল ও টুকুকে নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা হয়ে কোনাবাড়ির কাছাকছি ফ্লাইওভারের কাছে আসার পর অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর শামসুল অটোরিকশার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। অন্যদিকে টুকু ওরফে হাফিজ অন্য ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আলমগীরের সিএনজিতে উঠে হুমায়ুনের অটোরিকশাকে অনুসরণ করেন। মৌচাক পার হয়ে লোহাকৈর মাজার রোডের কাছে পৌছালে তারা ভিকটিমের পকেট থেকে টাকা ও মোবাইল রেখে তাকে অটোরিকশা থেকে ধরে রাস্তায় পাশে নামিয়ে রেখে অটোরিকশা নিয়ে কাশিমপুর থানার জিরানী এলাকায় যান । এরপর অটোরিকশা রেখে রাত ১২ টার দিকে ভিকটিমের অবস্থা দেখতে লোহাকৈর মাজারের কাছে আসেন। সেখানে তারা ভিকটিমকে চায়ের দোকানের সামনে সিগারেট খেতে দেখেন। এনিয়ে পরবর্তীতে ঝামেলা হতে পারে ভেবে চায়ের দোকান বন্ধ হলে ছিনতাইকারীরা ভিকটিমকে কৌশলে ডেকে পুকুরঘাটে নিয়ে ধাক্কা মেরে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান।

গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত অটোরিকশা,ভিকটিমের মোবাইল ফোন ,ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত সিএনজি,বিভিন্ন সময়ে লুণ্ঠিত বিভিন্ন ইজিবাইকের খণ্ডিত অংশ, ঝাল-মুড়ি বিক্রির উপকরণ, অটোরিকশার খোলা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র ও রঙ করার উপকরণ উদ্ধার করেছে।