পুলিশি হেফাজতে আসামিরা। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

রাজেন্দ্র কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র প্রান্ত মিত্র (২৩) হত্যাকাণ্ড এবং একাধিক ছিনতাইয়ের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ও ছিনতাইয়ে জড়িত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলার কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।

বুধবার (২ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান পিপিএম (সেবা) জানান, গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাতে রাজধানী ঢাকা ও ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. সজীব শেখ (২৩), মো. ইস্রাফিল মল্লিক (৩৪), মো. সিফাতুল্লাহ বেপারী (২০) ও মাসুম (৩৪)। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মোটরসাইকেল, একটি চাকু, একটি চাপাতি, একটি রেঞ্জ, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৫ জুলাই রাত সোয়া ২টার দিকে শহরের আলীপুর ব্রিজ এলাকায় ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন ভুক্তভোগী প্রান্ত। এ সময় ছিনতাইকারীরা তাঁর বুকে ছুরি মেরে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয় এবং একটি মামলা করা হয়।

উদ্ধার করা সরঞ্জাম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

তিনি জানান, একই রাত পৌনে ৪টার দিকে শহরের আলীপুর বাদামতলী সড়কের এক সবজি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় আসামিরা। রাত সোয়া ৪টার দিকে ধুলদী জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আবু নাসিরের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। ভোর পৌনে ৫টার দিকে কমলাপুর এলাকায় মোহাম্মদ মশিউর রহমান জাদু মিয়া (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় আসামিরা। এ ঘটনায় জাদু মিয়ার ভাই কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এরপর গত ১ আগস্ট ভোরে একই কায়দায় শহরের বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সামনে মো. শরীফুল্লাহ মাহমুদ নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনতাই করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলা তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এরপর তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে আসামি সজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রান্তের মোবাইল ফোনটি তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। সজীবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফরিদপুরের মধুখালী থানা এলাকা থেকে আসামি ইস্রাফিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছুরিকাঘাতের শিকার জাদু মিয়ার মোবাইল ফোন।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান পিপিএম (সেবা) । ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সজীব ও ইস্রাফিলের দেওয়া তথ্যে ১ আগস্ট দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কানাইপুর এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, চাপাতি ও রেঞ্জ উদ্ধার করা হয়। একই রাত সাড়ে ৩টার দিকে কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে আসামি সিফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ আসামি মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।