১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি আধুনিকায়ন, যুগোপযোগী ও বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করা হচ্ছে ।
বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গবেষণাপূর্বক যুগোপযোগী, আধুনিকায়ন ও বাংলা ভাষায় প্রণয়নে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।

লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে এ কমিটি গঠনের আদেশ দেওয়া হয়েছে। খবর বাসসের।

গত ১৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন এবং এ-সংক্রান্ত সংস্কার ও গবেষণাপূর্বক তা যুগোপযোগী, আধুনিকায়ন ও বাংলা ভাষায় প্রণয়নের জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হককে নির্দেশনা দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক আজ লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবিরকে চেয়ারপার্সন এবং আইন ও বিচার বিভাগের সিচিব মো. গোলাম সারওয়ারকে কো-চেয়ারপার্সন করে নয় সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করে দেন।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত সচিব হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা ও কাজী আরিফুজ্জামান, উপসচিব শেখ গোলাম মাহবুব, যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর, উপসচিব গাজী কালিমুল্লাহ ও যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. মুনিরুজ্জামান।

কমিটির কার্যপরিধি হবে (ক) ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন এবং এতৎ-সংক্রান্ত সংস্কার ও গবেষণা এবং তা যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সুপারিশ প্রদান (খ) ফৌজদারি কার্যবিধির বাংলা ভাষায় প্রণয়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান (গ) ফৌজদারি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বর্তমানে ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগের ক্ষেত্রে কী কী সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সুপারিশ প্রদান (ঘ) ফৌজদারি কার্যবিধির এবং এতৎ-সংক্রান্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশের আইন পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ প্রদান এবং (ঙ) কমিটি প্রয়োজনে, এক বা একাধিক সদস্যকে কমিটিতে কো-অপ্ট করতে পারবে।

কমিটি যত দ্রুত সম্ভব আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে পর্যালোচনা-সংক্রান্ত সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

কমিটি গঠনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে প্রণীত উপর্যুক্ত ফৌজদারি কার্যবিধি দ্বারা বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিন প্রকৌশল ও ন্যানোপ্রযুক্তির এই যুগে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মামলা পরিচালনা করা দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ। এ কারণে ফৌজদারি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি এবং জনগণের আইনি অভিগম্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফৌজদারি কার্যবিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন এবং এতৎ-সংক্রান্ত সংস্কার ও গবেষণাপূর্বক তা যুগোপযোগী, আধুনিকায়ন ও বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রযোজ্য সকল আইনকে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে জারীকৃত ল’জ কনটিনিউয়েন্স এনফোর্সমেন্ট অর্ডার দ্বারা একই তারিখে জারীকৃত প্রোকলেমেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্টস এর বিধান সাপেক্ষে অব্যাহত রাখা হয়। পরবর্তীকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৯ অনুচ্ছেদ দ্বারা অব্যাহত থাকা ওই আইনগুলোকে হেফাজত করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে প্রচলিত ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান আমলে প্রণীত অনেক আইন আজও বিদ্যমান রয়েছে।