সিআইডির অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের একজন। ছবি: সিআইডি

ঢাকার কাফরুল ও চট্টগ্রামের খুলশী থানা এলাকা থেকে সোমবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন তমালিকা আক্তার (২৪) ও আবু সাঈদ রনি (২৮)। তাঁদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফির কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়, যেগুলোতে আপত্তিকর ছবি ও ভিভিও পাওয়া যায়।

সিআইডি জানায়, একাধিক সক্রিয় নারী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে খবর পায় সিআইডির সাইবার টিম। এর ভিত্তিতে সিআইডি অনুসন্ধান করে জানতে পারে, প্রতারক চক্র প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাতিয়ে ইমোতে যোগাযোগ করে ঘনিষ্ঠ হয়। সম্পর্কের একপর্যায়ে তাদের একান্ত সময়ের ভিডিও আর আপত্তিকর ছবি ধারণ করে রাখে। ভিডিও কলে আপত্তিকর কন্টেন্ট কৌশলে ধারণ করে অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা হাতিয়ে নেয়। এ জন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকগুলো আইডি ব্যবহার করে। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা আইডিগুলো পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়।

সিআইডি আরও জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চিকিৎসক সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাঁর ও তাঁর সাবেক স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতার একান্ত মুহূর্তের ভিডিও তাঁর টেলিগ্রাম এবং বর্তমান স্ত্রীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠাচ্ছেন। আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছে টাকা দাবি করে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।

গ্রেপ্তার পরবর্তী আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার তমালিকা আক্তার ও অভিযোগকারীর সাবেত স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতা পরস্পর বন্ধু এবং তাঁরা দুজনেই বিভিন্ন ব্যাক্তিদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে ইমো ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভিডিও কলের মাধ্যমে আপত্তিকর মুহূর্তগুলো গোপনে ধারণ করে রাখেন। এই অভিযোগকারীর সঙ্গে মারিয়া ইসলাম নিকিতা ভিডিওকলে আপত্তিকর মুহূর্তগুলো গোপনে ধারণ করেন এবং সেই রেকর্ডকৃত ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অভিযোগকারীকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেলে নিকিতা তাঁর বন্ধু তমালিকাকে বর্ণিত ভিডিওটি সরবরাহ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তমালিকা ওই ভিডিও চট্টগ্রামে অবস্থানকারী তাঁর প্রেমিক আবু সাঈদ রনিকে সরবরাহ করে। রনি সেই ভিডিও অভিযোগকারী এবং তাঁর বর্তমান স্ত্রীকে টেলিগ্রাম ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে তাঁদের কাছে টাকা দাবি করে তাঁদের ব্ল্যাকমেইল করেন।

গ্রেপ্তার দুজন জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা পরস্পর যোগসাজশে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে থেকে অভিযোগকারী ছাড়াও আরও অনেকের সঙ্গে এভাবে ইমো ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে আপত্তিকর মুহূর্তগুলো রেকর্ড করে রেখে তাঁদের ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন।

গ্রেপ্তার দুজনের নামে রাজধানীর কলাবাগান থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।