বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) নতুন পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার রাজশাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। সোমবার (৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় আরএমপি সদর দপ্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বেলা সাড়ে ৩টায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। খবর আরএমপি নিউজের।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার শুরুতে পুলিশ কমিশনার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আরএমপি কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ দেশপ্রেম ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। জাতির পিতার উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপনারা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে আমাদের এই স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। আপনাদের এ ত্যাগের জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে জনগণের সেবা করছি। যেকোনো প্রয়োজনে আপনারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা সমাধান করব।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ ঘটনাবলি স্মৃতিচারণ করেন। আরএমপিতে পুলিশ কমিশনারের যোগদানের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করায় তাঁরা পুলিশ কমিশনারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং তাঁরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে পুলিশ কমিশনারের পাশে থাকার কথাও ব্যক্ত করেন। সভায় রাজশাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ আরএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আরএমপি কমিশনার। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আরএমপি কমিশনার

এরপর বেলা সাড়ে ৩টায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় পুলিশ কশিমনার বলেন, আমরা জানি, মিডিয়া হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং তৃতীয় নয়ন। মিডিয়ার কারণে আমরা ঘটে যাওয়া যেকোনো বিষয়ে জানতে পারি। সমাজের নানা সমস্যা আপনারাই তুলে ধরেন। এই নগরীকে নিরাপদ রাখতে কী প্রয়োজন, তার প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। আপনারা বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।

তিনি বলেন, এই সুন্দর রাজশাহী নগরীর নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও সিসি ক্যামেরা স্থাপন, নাইট ভিশন ক্যামেরা, ফেইস এবং গাড়ির নম্বর আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম চালু করা হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা রাজশাহী মহানগরীকে দুবাই ও সিউলের মতো ‘নিরাপদ নগরী’ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো নৈরাজ্য ও আগুন-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও উসকানিদাতাদের যথাযথ আইনের মাধ্যমে প্রতিহত করা হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) বিজয় বসাক (বিপিএম, পিপিএম-বার), উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) সাইফউদ্দীন শাহীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সেক্রেটারি, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন নিউজপোর্টালের সাংবাদিকেরা।