খুলনা রেঞ্জ পুলিশ ও পুনাক খুলনা রেঞ্জের যৌথ আয়োজনে যশোর পুলিশ লাইন্সে মাননীয় রেঞ্জ ডিআইজির বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার সময় যশোর পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে খুলনা রেঞ্জ পুলিশ ও পুনাক খুলনা রেঞ্জের যৌথ আয়োজনে রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, বিপিএম(বার) ও তার সহধর্মিনী খুলনা রেঞ্জ পুনাক সভানেত্রী(পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি), ডা. ফাতিমা জেসমিনের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথমেই বিদায়ী অতিথিদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে মূল অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভৈরব শিল্পগোষ্ঠীর একটি মনোমুগ্ধকর দলীয় নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে বিদায়ী অতিথিদের অনুষ্ঠানে স্বাগতম জানানো হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিদায়ী অতিথি সম্পর্কে নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন এ রেঞ্জের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

পরবর্তীতে অনুষ্ঠানের মধ্যমনি খুলনা রেঞ্জ পুলিশের অভিভাবক বিদায়ী অতিথি রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, বিপিএম(বার) তার বক্তব্যের শুরুতেই এত সুন্দর জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায় সংবর্ধনা প্রদানের জন্য আয়োজকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি আমার প্রিয় মাতৃভূমিকে এবং আমার ইউনির্ফমকে। সেই জন্যই আমার অন্য পেশায় একাধিক সুযোগ থাকা সত্বেও বিসিএসে প্রথম চয়েজ ছিল পুলিশ। আমি এই চাকরিটাকে ইবাদত মনে করি। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সুতরাং এখানে নিজের ভূখন্ডের প্রতি আমার প্রতারণা করার কোনও সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আমি কোনও কম্প্রোমাইজ করে এ রেঞ্জের কার্যক্রম পরিচালনা করিনি। আমি সব সময় চেষ্টা করেছি সৎ থেকে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের সকলের একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে সেটা হলো আমাদের অর্জনটা যেন সৎভাবে হয়।

তিনি আরো বলেন, আমি পেশাগত কারণে আমার অধীনে এ রেঞ্জের প্রায় ১৪ হাজার প্লাস সহকর্মীদের সাথে একই আচরণ করতে পারিনি সেটা হয়ত অবশ্যই কাজের স্বার্থে। আমি পেশাগত কারণেই অনেক সময় সহকর্মীদের সাথে শাসনের সুরে কথা বলেছি। তবে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি সহকর্মীদের ওয়েলফেয়ারে আমি কখনো কোনও প্রকার কার্পণ্য করিনি।

পরিশেষে মাননীয় রেঞ্জ ডিআইজি তার ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য উপস্থিত সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

এসময় রেঞ্জ পুলিশ খুলনা ও রেঞ্জ পুনাক খুলনার পক্ষ থেকে বিদায়ী অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বিদায়ী অতিথি রেঞ্জ ডিআইজির সহধর্মিনী ও খুলনা রেঞ্জ পুনাক সভানেত্রী ডা. ফাতিমা জেসমিন এবং যশোর জেলার পুলিশ সুপারের স্ত্রী বিপ্লবী রানী, সভানেত্রী পুনাক, যশোর ও অতিরিক্ত পরিচালক জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

পরবর্তীতে অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন এ অনুষ্ঠানের সভাপতি যশোর জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম(বার), পিপিএম মহোদয়।

পুলিশ সুপার বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের মধ্যমনি খুলনা রেঞ্জ পুলিশ তথা আমাদের সকলের অভিভাবক বিদায়ী অতিথি মাননীয় রেঞ্জ ডিআইজি হলেন সততা ও নিষ্ঠার এক প্রতীক।

স্যার পেশাদারত্ব, আন্তরিকতা, দক্ষতা ও অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে তার ওপর অর্পিত সকল দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি হলেন বাংলাদেশ পুলিশের উজ্জ্বল এক নক্ষত্র।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার “ক” সার্কেল যশোর।

আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে যশোর জেলার জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীবৃন্দ তাদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপহার দেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি মহোদয়গণ, খুলনা আরআরএফ কমান্ড্যান্ট মহোদয়, এ রেঞ্জের সকল জেলার পুলিশ সুপারগণ, পুলিশ সুপার পিপিআই, যশোর, খুলনা রেঞ্জ পুনাকের সকল নেতৃবৃন্দ সহ জেলা পুলিশ এবং অন্যান্য ইউনিটের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সবৃন্দ।