আফগানিস্তানে গত তিন সপ্তাহে প্রবল বৃষ্টি ও তুষারে অন্তত ৬০ জন প্রাণ হারিয়েছে। বুধবার (১৪ মার্চ) দেশটির দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

আফগানের দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জনান সায়েক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘‘গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তুষার ও বৃষ্টিপাতের কারণে দুর্ভাগ্যক্রমে ৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এতে আরও ২৩ জন নানা দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘প্রায় ১,৬৪৫টি বাড়িঘর হয় আংশিক না হয় পুরোই ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রায় ১ লাখ ৭৮ হাজার গবাদিপশু মারা গেছে।’’

মার্কিন সমর্থিত সরকারের পতন এবং তালেবানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর দরিদ্র এ দেশটিতে বিদেশি সাহায্য একেবারে কমে গেছে। ফলে দেশটির দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে।

আফগান দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, চলমান দুর্যোগে প্রায় ১,৬৪৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া প্রায় ১ লাখ ৭৮ হাজার গবাদিপশুও মারা গেছে।

এদিকে গত অক্টোবরের ভয়াবহ ভূমিকম্পে লল্ডভন্ড পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে নতুন করে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে সেখানে প্রবল বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রাদেশিক রাজধানী হেরাত শহরে বাড়ির ছাদ ধসে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আব্দুল জাহের নূরজাই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

কয়েক দশকের যুদ্ধে বিপর্যস্ত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ আফগানিস্তান। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এই দেশ।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন দখলদারত্বের পর দক্ষিণ এশীয় দেশটি একসময় মানবিক সহায়তায় ভরপুর ছিল। তবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে আফগানিস্তানে অর্থায়ন কমে গেছে।

২০২১ সালে প্রদেশটিতে হড়কা বানের এক ঘটনায় ৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এর আগে ২০১৭ সালে তুষারধসের আরেক ঘটনায় ৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতেও পূর্বাঞ্চলের নুরিস্তান প্রদেশে ভারী তুষারপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে ২৫ জন নিহত ও আটজন আহত হন।