যশোর জেলা পুলিশ লাইনসে যশোর জেলা পুলিশের বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ পুলিশকে জনতার পুলিশ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জনতার পুলিশ হতে এ দেশের মানুষের পাশে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং তাদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে আসছে বাংলাদেশ পুলিশ।

আইজিপি ৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) বিকেলে যশোর জেলা পুলিশ লাইনসে যশোর জেলা পুলিশের বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. মনজুর রহমান পিপিএম (বার) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আইজিপি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করার সাথে সাথে পুলিশ ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেল দিয়ে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম বুলেট নিক্ষেপ করতে ভুল করেনি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করার জন্য যখনই কোনো হুমকি এসেছে, তখনই পুলিশ সদস্যরা জীবন বিলিয়ে দিতে কখনো কুন্ঠাবোধ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে সদা প্রস্তুত রয়েছে।

পুলিশপ্রধান বলেন, এ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল একসময় সন্ত্রাসের জনপদ ছিল। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতিতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছে। ফলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে আজ ব্যবসাবান্ধব, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

যশোর জেলা পুলিশের বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আইজিপি বলেন, খেলাধুলা মানুষকে জঙ্গিবাদ, মাদক, সন্ত্রাস থেকে মুক্ত রাখতে ভূমিকা রাখে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

আইজিপি পুলিশ সমাবেশের বর্ণাঢ্য প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে দেশ ও জনগণের কল্যাণে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার ওপর এক মনোজ্ঞ ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক, যশোর জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, রেঞ্জাধীন জেলার পুলিশ সুপারগণ এবং রেঞ্জ ও জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও তাঁদের সহধর্মিণীগণ, জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে ছিল পুলিশ সদস্যদের বালিশ যুদ্ধ, কলাগাছে আরোহণ ও যেমন খুশি তেমন সাজো, ইন্সপেক্টর থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১০০ মিটার দৌড়, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের ১০০ মিটার দৌড়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৫০ মিটার হাঁটা, পুলিশ কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিদের বেলুন ফুটানো, আমন্ত্রিত নারী অতিথিদের ৮০ মিটার দৌড়, পুলিশ কর্মকর্তাদের সহধর্মিণীদের সুরের তালে বালিশ বদল এবং অ্যালার্ম প্যারেড ইত্যাদি।

যশোর জেলা পুলিশের বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আইজিপি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্ট উপভোগ করেন। পরে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হকের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার) পিপিএম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী। আইজিপি এবং পুনাক সভানেত্রী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

যশোর জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার সমাপনী বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।