ইনতিসার আল-হাম্মাদি। ছবি: সংগৃহীত

‘অশ্লীলতার’ অভিযোগে ইনতিসার আল-হাম্মাদি নামে ইয়েমেনের এক অভিনেত্রী ও মডেলকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে হুতি বিদ্রোহী কর্তৃপক্ষ।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত রোববার (৭ নভেম্বর) দেশটির রাজধানী সানার একটি আদালত এ রায় দেন। ইনতিসারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া আরও তিন নারীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ২০ বছর বয়সী এই মডেল অভিযোগ করেছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে সানায় হুতি বিদ্রোহীদের হাতে আটক হওয়ার পর, তাঁকে শারীরিক ও মৌখিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। সে সময় তিনি চোখ বেঁধে নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মামলাটি নিয়ে ‘অনিয়ম ও অপব্যবহারের’ অভিযোগ রয়েছে।

পশ্চিম ইয়েমেনের বেশির ভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণে থাকা হুতিরা ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট সমর্থিত সরকারপন্থী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

হুতিদের পরিচালিত বার্তা সংস্থা সাবা জানিয়েছে, সানার একটি আদালত ইনতিসারকে অশ্লীল কাজ ও মাদকদ্রব্য রাখার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তাঁকে ও অন্য তিন নারীর মধ্যে একজনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকিদের মধ্যে একজনকে তিন বছর ও অপরজনকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

খালিদ আল-কামাল নামে ওই চার নারীর আইনজীবী বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, তাঁরা আপিল করবেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইয়েমেন গবেষক আফরাহ নাসের টুইটারে বলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দেওয়া রায় অন্যায় ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।

ইয়েমেনি সরকারের তথ্যমন্ত্রী মোয়াম্মার আল-ইরানি লিখেছেন, ইয়েমেনি নারীদের প্রতি সন্ত্রাসী হুতিদের করা হাজার হাজার অপরাধ ও সহিংসতার উদাহরণ এটি।

ইনতিসারের বাবা ইয়েমেনি ও মা ইথিওপিয়ান। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন এবং দুটি ইয়েমেনি টিভি সিরিজে অভিনয় করেছেন। মাঝে মাঝে অনলাইনের কিছু ছবিতে তাঁকে হিজাব ছাড়া দেখা যায়, যা রক্ষণশীল মুসলিম দেশটির কঠোর সামাজিক রীতিনীতির লঙ্ঘন।

ইনতিসারের আইনজীবী জুন মাসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছিলেন, তিনি সানায় অন্য নারীদের সঙ্গে গাড়িতে করে যাওয়ার সময় হুতি বিদ্রোহীরা তাঁদের গ্রেফতার করে। ইনতিসারের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল এবং তাঁর মডেলিং ফটোগুলোকে অশ্লীলতা বলে ধরা হয়েছে। এ জন্যই হুতিরা তাঁকে একজন পতিতা মনে করত।