পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ চাঞ্চল্যকর প্রিয়া খাতুন হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে। গ্রেপ্তার করেছে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুজনকে।

অশালীন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. লকি উদ্দিন (৪২) ও মো. বুলবুল আহম্মেদ (৩৫)। মামলা হওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড় ৮টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার মশিন্দা এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান থেকে নামিয়ে প্রিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

নিহত ২২ বছরের প্রিয়া খাতুন একই এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে। তিনি ঈশ্বরদীর ইপিজেডে কাজ করতেন। বিবাহবিচ্ছেদের পর এক বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে তিনি তাঁর বাবার বাড়িতেই থাকতেন। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে আসামি মো. লকি উদ্দিন প্রিয়াকে উত্ত্যক্ত করতেন ও অশালীন প্রস্তাব দিতেন। বিষয়টি প্রিয়া তাঁর পরিবারকে জানালে লকি উদ্দিনকে প্রিয়াকে উত্ত্যক্ত না করতে একাধিকবার নিষেধ করা হয়। এতে লকি উদ্দিন প্রিয়ার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর আসামি বুলবুলসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের সাথে প্রিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গতকাল কাজ শেষে ঈশ্বরদী থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন প্রিয়া। রাত ৮টার দিকে বড়াইগ্রাম থানাধীন কয়েন বাজারে বাস থেকে নেমে ২ নং আসামি বুলবুলের ব্যাটারিচালিত ভ্যানে উঠে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। মশিন্দা বিলের মাঝখানে চৌরাস্তায় পৌঁছানোমাত্র ওত পেতে থাকা লকি উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ভ্যানের সামনে দাঁড়ান এবং জোরপূর্বক প্রিয়াকে ভ্যান থেকে নামিয়ে পার্শ্ববর্তী ফাঁকা মাঠে নিয়ে যান। এরপর লকি উদ্দিন তাঁর হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে প্রিয়া খাতুনের মুখে, গলায়, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে এবং মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা এসে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় শুক্রবার রাতেই একটি মামলা হয়।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার পুলিশ সুপারের সার্বিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্ব ও অপারেশন পরিকল্পনায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা এবং বিশ্বস্ত সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত লকি উদ্দিন ও বুলবুল আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করে।