পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিয়ে জালিয়াতি করার অভিযোগে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের পল্টন থানার সদস্যরা।

মঙ্গলবার (৩১ মে) ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানা, খিলক্ষেত ও কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিরা হলেন মো. মাসুদ মিয়া (৪৮), মেঘ কামাল হোসেন (৪৮) ও মো. গোলাম কিবরিয়া।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি পল্টন মডেল থানায় অনলাইনে পূরণ করা কিছু আবেদন যাচাইবাছাইয়ের সময় ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। গত ২০ এপ্রিল আসামি মাসুদ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য ডিএমপি কমিশনারের কাছে একটি আবেদন করেন। তদন্তকালে আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত অনলাইন ডকুমেন্ট নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ। আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত প্রত্যয়নপত্রটি সঠিক নয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর। এরপর আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে শেরেবাংলা নগর থানাধীন ফার্মগেট এলাকা থেকে আসামি মাসুদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেঘ কামাল হোসেনকে খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে এবং আসামি মো. গোলাম কিবরিয়াকে কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, মাসুদের নামে মাধবদী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাই বিদেশ যেতে পল্টন মডেল থানার ঠিকানা ব্যবহার করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের আবেদন করেন তিনি। এ জন্য ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে কামালকে পাসপোর্ট দেন মাসুদ। পরে ২৮ হাজার টাকা চুক্তিতে কিবরিয়াকে সেই পাসপোর্ট দেন কামাল। পরে মূল পাসপোর্টের তথ্য পাতা স্ক্যান করে জরুরি যোগাযোগের ঠিকানা কম্পিউটারের মাধ্যমে এডিট করে পল্টন মডেল থানার একটি ঠিকানা ব্যবহার করে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করা হয়। পাসপোর্টধারীর ঠিকানা পরিবর্তন ও এডিট করা পাসপোর্টের ফটোকপিতে জাল সিলমোহর ও স্বাক্ষর সংযুক্তের মাধ্যমে সত্যায়তির করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়।

পুলিশ জানায়, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ পন্থায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করে আসছিল। তাঁরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করে অর্থের বিনিময়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছিল। চক্রটি কিছুদিন আগে ছয়টি ভুয়া আবেদন করেছিল, যা প্রত্যাখ্যান করে দেয় পল্টন থানা-পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংক্রান্ত পরামর্শ: বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সঙ্গে নাগরিকদের এ সেবাটি প্রদান করে আসছে। নাগরিকদের জানানো যাচ্ছে যে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য ব্যাংকে ৫০০ টাকা জমা দিতে হয়। এ ছাড়া আর কোনো অর্থ প্রদানের প্রয়োজন নেই।