ভিডিও এবং নাটকে অনলাইন জুয়ার প্রচারণার অভিযোগে জনপ্রিয় ইউটিউবার ও অভিনেতা প্রত্যয় হিরণ ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। খবর সমকালের।
ডিবি জানিয়েছে, তাঁরা ‘আজাইরা লিমিটেড’ নামে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটের প্রচারণা করে ভিডিও বানাতেন। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে এজেন্টের মাধ্যমে বিদেশি জুয়ার প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপন চালানোর অভিযোগও রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়েরের পর তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ডিবি জানিয়েছে, নাটকের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপনী সংলাপ দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিজ্ঞাপনের বাজারে ইউটিউব-ফেসবুকের ভিডিওতে নতুন এই ধারার প্রচলন শুরু হয়েছে। ৪৫ লাখ সাবস্ক্রাইবারের ‘আজাইরা লিমিটেড’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা ভিডিওতে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
ডিবি আরও জানায়, প্রত্যয় হিরণরা বিশ্বব্যাপী জুয়ার সাইট ওয়ানএক্সবেট, বাবুএইটিএইট, ক্রিকেক্স নামের জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন বাবদ ভিডিওপ্রতি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা করে নিতেন। ভারতীয় একটি এজেন্সির সঙ্গে বিজ্ঞাপনের জন্য এজেন্ট হয়ে আব্দুল হামিদ নামের একজন কাজ করতেন। অভিযুক্তরা যে সাইটের বিজ্ঞাপনের জন্য আটক হয়েছেন, একই সাইটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান সমালোচনায় পড়েছিলেন। পরে তিনি চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হন।
তারেক বিন রশিদ বলেন, তাঁরা ইউটিউব ভিডিওতে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছিলেন। এ অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বছরখানেক প্রত্যয় হিরণদের ওপর নজর রেখে এ সপ্তাহে রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করে আমরা জানতে পেরেছি, অনলাইন জুয়াড়িরা দেশের বাইরে থেকে এসব পরিচালনা করে। ভারতীয় এজেন্টদের মাধ্যমে জনপ্রিয় ইউটিউবার কিংবা অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন দেয় তারা।
ইউটিউবে বেশ জনপ্রিয় প্রত্যয় হিরণ। ‘আজাইরা লিমিটেড’ নামে তার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার প্রায় সাড়ে চার মিলিয়ন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা ভিডিওতে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখে কিশোর-তরুণেরা বেটিং সাইটে আসক্ত হচ্ছে বলেও জানান ডিবির এ কর্মকর্তা। এর ফলে তাঁদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।