
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এনডিসি।
দিবসটি উপলক্ষে ডিএমপির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ট্রাফিক পরিকল্পনা সম্পর্কে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডিএমপি কমিশনার। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হতে যাচ্ছে। পরম শ্রদ্ধায় পুরো জাতি এই দিবসটি পালন করবে। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রথমে ভিভিআইপি, ভিআইপি এবং এরপর জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আনুমানিক রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জনসাধারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব সবাই যেন বেদীতে পুষ্পমাল্য দেওয়ার সময় যথাযথ শৃঙ্খলা মেনে চলেন।
তিনি বলেন, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষের সমাগম অনেক বেশি হয় এবং শহীদ মিনারে প্রবেশের সময় অনেক ভিড় হয়। এই ভিড়ের মধ্যে যেন কোনো দুর্ঘটনা না হয়, আমরা সচেতন থাকব। পাশাপাশি যাঁরা আসবেন তাঁদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনারা নিজেরা নিজেদের নিরাপত্তা, মোবাইল, মানিব্যাগ ও মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, শহীদ মিনারকেন্দ্রিক তিন/চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে শনিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন উপলক্ষে আমরা কোনো নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখছি না। ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে স্থাপন ও দেহ তল্লাশি। কেউ যেন দাহ্য পদার্থ, বিস্ফোরক দ্রব্য বা এই জাতীয় কোনো কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন এদিন প্রচুর লোক সমাগম হয়, সে জন্য সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। শহীদ মিনারের চারপাশে এক কিলোমিটার রেডিয়াসের ভেতরে আমাদের বিভিন্ন মোবাইল টিম মোতায়েন থাকবে।
শহীদ দিবস উপলক্ষে ট্রাফিক বিভাগের নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বিপিএম বলেন, শহীদ মিনারে ব্যাপক লোক সমাগম হবে, সে জন্য সাতটি পয়েন্ট রোড ব্লকার দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে। পয়েন্টগুলো হলো শাহবাগ ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, চাঁনখারপুল ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং ও বকশীবাজার ক্রসিং। পলাশী ক্রসিং থেকে ভাস্কর্য ক্রসিং, জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশ এবং শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রোমানা ক্রসিং-দোয়েল চত্বর ক্রসিং হয়ে বের হয়ে যেতে পারবেন। অন্য কোনো পথ দিয়ে বের হতে পারবে না।
তিনি বলেন, সাধারণত সন্ধ্যা ৬টায় সংশ্লিষ্ট রাস্তা বন্ধ করা হয়। তবে এবার ঢাকা শহরের ট্রাফিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাত ৮টায় রাস্তা বন্ধ করা হবে। রাত ১২টা ৪০ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য জনসাধারণকে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম পিপিএম; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপপুলিশ কমিশনার এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।