পুলিশি হেফাজতে আসামিরা। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

নরসিংদীর শেখেরচরে ঘরে ঢুকে সুমনা আক্তার তিথি (১৩) নামের এক কিশোরীকে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি, রশি ও লুণ্ঠিত ১০ লাখ টাকা।

গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন দত্তেরকাঠি এলাকা এবং নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বাসায় চুরি করতে গিয়ে তিথিকে হত্যা করেন তাঁরা। এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তাঁরা।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন ফরিদপুরের মধুখালী থানা এলাকার মো. রমজান শেখ লিমন (২২), হাসিবুর রহমান শান্ত (৩১), নরসিংদীর মাধবদী থানা এলাকার মো. কাউছার মিয়া (২০) এবং নরসিংদী সদর থানা এলাকার মো. ইমন আলী (২১)।

পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, ভুক্তভোগী তিথির বাবা মোফাজ্জল হোসেন (৫৩) একজন ব্যবসায়ী। গত ২৭ জানুয়ারি মেয়ে তিথি, ছেলে তানজিমুল ইসলাম (৯) এবং স্ত্রী আসমা আক্তারকে (৪৫) বাসায় রেখে বাইরে যান তিনি। রাত সাড়ে ১১টায় বাসায় ফিরে তিথি ও আসমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তিথিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা করেন তিথির বাবা।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের এক পর্যায়ে আসামি লিমন ও তাঁর ভাই শান্তকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন দত্তেরকাঠি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার করা হয় লুণ্ঠিত ১০ লাখ টাকা। পরে অপর আসামি কাউছারকে নরসিংদী সদর থানাধীন শেখেরচরের ব্রাদার্স ডাইং থেকে এবং ইমনকে নরসিংদী সদর থানাধীন মোবারক স্পিনিং মিলের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তিথির বাবা মোফাজ্জলের দোকানে কেনাকাটা করতেন আসামি লিমন। পাশের বিকাশের দোকান থেকে প্রায়ই টাকা তুলতেন মোফাজ্জল। তা দেখে তাঁর বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করেন লিমন। পরে বিষয়টি অপর আসামিদের জানান। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোফাজ্জলের বাসায় যান আসামিরা। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তিথির মুখ চেপে ধরেন লিমন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিথির মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর তিথির মায়ের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন আসামিরা। এ সময় তিথির ভাইকে বাথরুমে বন্দি করে টাকা ও দুটি আংটি নিয়ে পালিয়ে যান আসামিরা।