পুলিশি হেফাজতে আসামি মাইকেল, রাব্বি ও ইমরান। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দুজনকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গেন্ডারিয়া থানা-পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জালাল সরদার ওরফে মাইকেল (২১), ফজলে রাব্বি ওরফে কালা (২৫) ও মো. ইমরান (৩০)।

গেন্ডারিয়া থানা-পুলিশ জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে গেন্ডারিয়া থানাধীন জুরাইন এলাকার গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন জিন্নাহ। পোস্তগোলা থেকে দুই যাত্রী নিয়ে রাত ৩টার দিকে গেন্ডারিয়া থানাধীন আঞ্জুমান কবরস্থানের সামনে পৌঁছামাত্রই তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন ওই দুই যাত্রী। জিন্নাহর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে ওই দুজন পালিয়ে যান। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর গেন্ডারিয়া থানায় মামলা করা হয়।

এই মামলার তদন্ত চলাকালে গত ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডের কচিকাচা বিদ্যানিকেতন গলিতে রিকশাচালক আনোয়ারকে (৪০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর গেন্ডারিয়া থানায় আরো একটি হত্যা মামলা করা হয়।

ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, দুটি মামলার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দুটি অপরাধের কৌশল একই ধরনের। একটি নির্দিষ্ট অপরাধী চক্র এর সঙ্গে জড়িত। তদন্তকালে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুজনকে শনাক্ত করা হয়। তাঁদের একজনের নাম জালাল সরদার ওরফে মাইকেল। গত ২৪ অক্টোবর ভোরে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জালাল দুটি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আঞ্জুমান কবরস্থানের পাশে অটোরিকশাচালক জিন্নাহ হত্যায় তাঁর সঙ্গে ফজলে রাব্বি কালাও জড়িত ছিলেন। কিন্তু দীননাথ সেন রোডের কচিকাচা বিদ্যানিকেতন গলিতে অটোরিকশাচালক আনোয়ারকে তিনি একাই হত্যা করে রিকশা ছিনতাই করেন। ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি গেন্ডারিয়ার মো. ইমরানের (৩০) কাছে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন মাইকেল। গত ২৫ অক্টোবর রাতে ডিআইটি প্লট এলাকা থেকে ওই অটোরিকশাসহ ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মাইকেল।

তিনি আরও জানান, গত ৩ নভেম্বর গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় গেন্ডারিয়ার কবরস্থান এলাকা থেকে ফজলে রাব্বি ওরফে কালাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনিও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।