গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন ভাদাইলে আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) পিবিআই ঢাকার পুলিশ সুপার কুদরত ই খুদা জানান, গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন তানভীর হাসান হিমেল (২২) ও তরিকুল ইসলাম তারেক (২৮)।

তিনি জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর আশুলিয়ার উত্তর ভাদাইল গ্রামে নিজেদের ফ্ল্যাটে খুন হন ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বাচ্চু, তাঁর চতুর্থ স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও চার বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মিজানুরের বোন আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। হত্যাকারী তানভীর হাসান হিমেল (২২) ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বাচ্চুর প্রথম স্ত্রীর সন্তান এবং অপর আসামি তরিকুল ইসলাম তারেক (২৮) ভুক্তভোগীর বাড়ির ভাড়াটিয়া।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনার দিন স্বপ্না বেগম মেয়ে জান্নাতুলকে নিয়ে স্কুলে গেলে হিমেল ও তরিকুল শয়নকক্ষে ঢুকে ঘুমন্ত মিজানুরকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত ও বালিশ চাপায় হত্যা করেন। কয়েক ঘণ্টা পর জান্নাতুলকে নিয়ে বাসায় ফেরেন স্বপ্না। এ সময় মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আসামিরা।

হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন আসামিরা। এ জন্য তাঁরা লাশগুলো বিছানার ওপর পাশাপাশি শুইয়ে কক্ষের ভেতর কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর বাইরে এসে লোহার দরজা ছিদ্র করে ভেতরের লক লাগিয়ে দেন। পরে তারা নিজেরাই চিৎকার শুরু করলে আশপাশের ভাড়াটিয়ারা ঘটনাস্থলে এসে দরজা খোলেন। পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে।

তিনি জানান, ঘটনার পর হিমেল ও তরিকুল আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৪ অক্টোবর ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকার বারুয়াখালি থেকে তরিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ডে তরিকুল হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি, পুতুল এবং কাঁচি জব্দ করা হয়। পরে অপর আসামি হিমেলকে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের দেওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশ সুপার বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হিমেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তাঁর বাবা ও সৎমা। আর এই কাজে তরিকুলকে ভাড়া করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু হিমেল সব জেনে যাওয়ায় উল্টো তরিকুলকে ম্যানেজ করে সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এক পর্যায়ে তরিকুলকে সঙ্গে নিয়ে তিনজনকে হত্যা করেন হিমেল।