নির্বাচন কমিশনের ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন উত্তর কাজীপাড়া এলাকা থেকে তারেক এম বরকতউল্লাহ নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ডাটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক।
বুধবার বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ অনুযায়ী, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো অবস্থাতেই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পরবে না।
তিনি আরও জানান, চুক্তি অনুযায়ী, ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপিটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য দেয়। ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি নাগরিকদের ব্যক্তিগত এই তথ্য porichoy.gov.bd/ নামের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০টিরও বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে আসছে।
তিনি জানান, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংরক্ষিত ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ডাটা সেন্টারটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে প্রজ্ঞাপন দ্বারা স্বীকৃত। বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার আসামিরা বিভিন্ন কোম্পানিসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ওই পরিকাঠামো থেকে ডাটাবেজ অনুলিপি সংগ্রহ করে স্থানান্তর করেন। এ ছাড়া তাঁরা ব্যক্তিগত নাগরিক তথ্য অবৈধভাবে সংগ্রহ ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার ই-ট্রানজেকশনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তারেকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কাফরুল থানায় মামলা করা হয়েছে।