
মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করত; ১০ জনের নাম দিত আর ৫০ জন দিত বেনামী। এখন কিন্তু পুলিশ মামলা করছে না। মামলা করছে সাধারণ জনগণ। মামলা হলেই গ্রেপ্তার নয়। আগে তদন্ত হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলেই কেবল তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) হেডকোয়ার্টার্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কাউট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ইউনিট লিডার শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের নামে প্রতিষ্ঠিত স্কাউটার ‘শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ভবন’ ও তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় উৎসর্গীকৃত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রবেশতোরণ উদ্বোধন করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁরা সবাই শহীদ। শুধু মুগ্ধ নন, যাঁরা শাহাদত বরণ করেছেন, তাঁদের সবার জন্য আপনারা দোয়া করবেন যেন তাঁরা শহীদের মর্যাদা পান।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা সরকার করবে। যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের বিদেশে পাঠাতে হয়, সে ব্যবস্থাও সরকার করবে। তাঁদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মোতাবেক আহত ও অসুস্থদের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে।
উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা অপরাধী তাঁদের বেশির ভাগই গত ৫ থেকে ৭ আগস্টের মধ্যে পালিয়ে গেছেন। আর যাতে নতুন করে পালাতে না পারেন, সে জন্য সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সে জন্য এখন পালানোটা তাঁদের জন্য বেশ দুরূহ হয়ে গেছে। আর এখন পালাতে গেলে শুধু পুলিশ ও বিজিবি নয়, সাধারণ জনগণই তাঁদের ধরিয়ে দিচ্ছে। উপদেষ্টা এ সময় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে সহযোগিতার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি সেলিম মো. জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ মো. ময়নুল ইসলাম এনডিসি। এ সময় শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত ও মুগ্ধের জমজ ভাই স্নিগ্ধ উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা পরে এপিবিএন মসজিদে স্কাউটার শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের আত্মার মাগফেরাত কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।