যশোরের অভয়নগরে মো. হাবিবুর রহমান (২৪) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এরই মধ্যে চার আসামিকে গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হাবিবুরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামিরা।
গত বুধবার (৩১ জুলাই) যশোরের অভয়নগর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পাইপ ও ক্রিকেট স্টাম্প।
আসামিরা হলেন যশোরের অভয়নগর থানা এলাকার মো. মেহেদী হাসান (২২), মো. হুমায়ুন শেখ (২১), মো. ফয়সাল শেখ (২১) ও খন্দকার আল আমিন (৩০)।
ডিবি যশোরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপন কুমার সরকার জানান, গত ২৮ জুলাই বিকেলে বন্ধু ইয়াসিনের সঙ্গে মধ্যমপুর তালতলা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে বের হন ভুক্তভোগী হাবিবুর। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন হাবিবুরের স্ত্রী। দুই দিন পর গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরের দিকে অভয়নগর থানাধীন বিভাগদী জয়েন্ট ট্রেডিং বালুর মাঠসংলগ্ন ভৈরব নদ থেকে হাবিবুরের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর হাত-পায়ে বাঁধা ছিল বালুর বস্তা, শরীরে ছিল ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। নিখোঁজের জিডি করার সময় হাবিবুরের স্ত্রীর সঙ্গে থানায় এসেছিলেন ইয়াসিন। তবে লাশ উদ্ধারের পর গায়েব হয়ে যান তিনি। ফলে তাঁকে সন্দেহ করে পুলিশ। মামলা দায়েরের মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহত হাবিবুর একজন মাদক কারবারি, আর আসামি ইয়াসিন তাঁর সহযোগী। মাদক বিক্রির টাকা ভাগাভাগি এবং আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইয়াসিন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৮ জুলাই সন্ধ্যায় হাবিবুরকে অভয়নগর থানাধীন বিভাগদী জয়েন্ট ট্রেডিং বালুর মাঠে নিয়ে আসেন ইয়াসিন। সেখান আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন অন্য আসামিরা। ঘটনাস্থলে আসামাত্রই হাবিবুরের গলায় ছুরিকাঘাত করেন ইয়াসিন। এ সময় অন্য আসামিরা স্টাম্প ও পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর তাঁর হাত-পায়ে বালুর বস্তা বেঁধে লাশ ভৈরব নদে ফেলে দেন।
ডিবি যশোরের ওসি জানান, গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকাণ্ডের হোতা ইয়াসিনসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।